Image description
► সম্ভাব্য ২৯৯ প্রার্থী মাঠে প্রচারে ব্যস্ত ► ইসলামি দলগুলো এক বাক্সে ভোটনীতিতে ঐক্যবদ্ধ

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে জামায়াতে ইসলামী। যদিও চলতি বছরের শুরুতেই কয়েক দফায় ২৯৯ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল দলটি। তার পর থেকে সেসব প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা সভাসমাবেশ, উঠান বৈঠক, কর্মী সম্মেলন করে চলেছেন। এর মধ্যে দলের পক্ষ থেকেও নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করা হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে।

জামায়াতের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের লক্ষ্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় ন্যায় ও সমতাভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন। এ লক্ষ্য সামনে রেখে দলটি পুরোদমে নির্বাচনমুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। যদিও জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি এবং নির্বাচনের পদ্ধতি (সংখ্যানুপাতিক বা পিআর) নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মতবিরোধ রয়েছে। তবে তা নিয়ে কুশলী হলেও উদ্বিগ্ন নয় জামায়াত। ইতোমধ্যে তারা ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দল নিয়ে জোট গঠন করে নিজেদের রাজনৈতিক লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মসূচিতে মাঠে রয়েছে। তবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী এবার কারও সঙ্গে নির্বাচনি জোট করবে না। এবার সমমনা ইসলামি দলগুলোর ভোট এক বাক্সে রাখার চিন্তা করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে দলগুলোর মধ্যে চিন্তার ব্যবধান থাকতেই পারে, তবে মানুষের কল্যাণে ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে নিজ দলগুলোর পক্ষ থেকে আট দল একযোগে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে এক বাক্সে ভোট পড়বে বলেও আশা করেছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশের মানুষ ইসলামের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সর্বত্র ইসলামকে রাষ্ট্র পরিচালনায় দেখতে চাওয়া মানুষের উপস্থিতি। এ বাস্তবতায় সব ইসলামপন্থি শক্তি একত্রে এক বাক্স ভোট নীতি গ্রহণ করেছে। যাতে ইসলামমনস্ক মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত না হয়। এবার জোট নয়, ইসলামি দলের ভোটের বাক্স হবে একটাই।’

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আমরা জোটে যাচ্ছি না। তবে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হচ্ছে। আমরা ওয়ান বক্স পলিসিতে যাচ্ছি। যেসব আসনে যে দলের সমর্থন বেশি রয়েছে বা যাঁকে দিলে জয়ী হয়ে আসতে পারবেন আমরা তাঁকে প্রার্থী দেব। সবাই মিলে তাঁকে জয়ী করার জন্য কাজ করব।’ জামায়াত সূত্র জানিয়েছেন, জেলা-উপজেলা নেতাদের ভোট এবং কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সবশেষ গাজীপুর-৬ আসনে ড. হাফিজুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। এখন শুধু বাকি নরসিংদী-৫ আসনের মনোনয়ন। এখন পর্যন্ত যাঁদের সম্ভাব্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাঁরা এলাকায় কাজ করছেন। তবে এ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত নয়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। পবিত্র ওমরাহ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফর শেষে গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় এক বছর আগেই এ তালিকা আঞ্চলিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। চূড়ান্ত তালিকাটা সময়মতো কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হবে। যেহেতু আমরা একা নির্বাচন করব না, আরও অনেককে ধারণ করব, দেশ ও জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে আমরা চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করব।’