দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায়ভার বিএনপির ওপর বর্তায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেছেন, আমরা পঁচাত্তরের যে ঘটনাপ্রবাহ দেখি, মুক্তিযুদ্ধের পর যে ঘটনাপ্রবাহ দেখি, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার যেমন আওয়ামী লীগের। এবং বর্তমান বাংলাদেশের যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার দায়ভারও বিএনপির ওপর বর্তায়।
মঙ্গলবার দলটির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিডিয়া সেল আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি: নভেম্বর, ১৯৭৫’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলোচনার কথা উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বিএনপি যে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে। সেগুলো থাকলে এনসিপির দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো অর্জন করা সম্ভব হবে না। বিএনপির নোট অব ডিসেন্টের বিপরীতে এনসিপির দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট বহাল না রাখলে জুলাই সনদে অর্জনের ছিটেফোঁটাও থাকবে না।
গণতান্ত্রিক উত্তরণকে এনসিপির প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটাকে নতুন করে গড়তে হলে আমাদের দলাদলি বাদ দিতে হবে। আমাদের দলীয় সংকীর্ণ চিন্তা বাদ দিতে হবে এবং বাংলাদেশের পক্ষে যে সংস্কার উপস্থাপনাগুলো আছে, তার পক্ষে আমাদের সকলকে অংশগ্রহণ করতে হবে।
এনসিপির নিবন্ধনের খবরে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি নিবন্ধন পাবে কি না; জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে কি নাই, সে বিষয় নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কটাক্ষ করেছে। কিন্তু আমরা দিন শেষে দেখিয়ে দিয়েছি যে বাংলাদেশের জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে এবং জনগণ এনসিপিকে সামনের নির্বাচনে যে সমর্থন ব্যক্ত করবে।
বিএনপি একদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে চায় উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, তারা যে গণতন্ত্রের কথা বলছে কিন্তু এটা শুধু জিয়িউর রহমানের পরিবারের গণতন্ত্র। আমরা তেমন গণতন্ত্র বাংলাদেশে চাই না।
জোটবদ্ধ দলগুলোকে নিজ প্রতীকেই নির্বাচন করার নিয়ম করে প্রতীক বিক্রির ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনকে তিনি ধন্যবাদ জানান । এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীকে ধর্মের নামে রাজনীতি না করার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন।
এনসিপি যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, মুক্তিযুদ্ধত্তোর রাষ্ট্রগঠনের ব্যর্থতার পেছনে শেখ মুজিবের বিভক্তির রাজনীতি অন্যতম কারণ। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশের ইতিহাস না, নিজেদের দলের ইতিহাসও সঠিকভাবে লেখানো সম্ভব না।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির প্রমুখ।