Image description
► অক্টোবরে কমেছে ৮ দশমিক ৩৯ ► সেপ্টেম্বরে ৫ দশমিক ৬৬ ► আগস্টে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ► শুল্কের প্রভাবে বৈশ্বিক ক্রেতা কমেছে ► কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পোশাক খাত

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করেছে। গত বছরে টালমাটাল অবস্থার রপ্তানির থেকেও এবার পোশাক রপ্তানি আরও কমেছে। পোশাক রপ্তানি কমায় টানা তিন মাসেও কমছে দেশের সার্বিক রপ্তানি। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে পোশাক রপ্তানি ভালো করলেও এরপর টানা তিন মাস ধাপে ধাপে কমছে। আগস্টে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে আগের মাসের থেকেও বেশি কমেছে অর্থাৎ ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। সর্বশেষ অক্টোবরে কমেছে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সঙ্গে দেশের সার্বিক রপ্তানিও কমেছে ধারাবাহিকভাবে। অক্টোবরে দেশের রপ্তানি আয়ে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমার হার ছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর আগস্টে কমেছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ একক পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানিই কমেছে ২৮ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে পোশাকের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার। আগস্টে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগস্টে রপ্তানি হয়েছে ৩১৬ কোটি ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩২৫ কোটি ডলার। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবরে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর নিট পোশাক রপ্তানি কমেছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের অক্টোবরে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৪৩ কোটি ডলারের। এ অর্থবছরের অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ১৩৬ কোটি ডলারের। সেপ্টেম্বরে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর নিট পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১২৮ কোটি ডলারের। এ অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ১২০ কোটি ডলারের।

আর নিট পোশাক রপ্তানি গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি ডলারের রপ্তানি হয়েছে। এ অর্থবছরে ১৬৩ কোটি ডলারের রপ্তানি হয়েছে। এর আগের মাস আগস্টে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর নিট  পোশাক রপ্তানি কমেছে ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্কের প্রভাবে বেশির ভাগ ক্রেতা নতুন করে অর্ডার দিচ্ছেন না। ব্যবসার এ ধীরগতি আগামী দুই থেকে তিন মাস অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন শুল্ক কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ ছাড়া চীনা ও ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অন্যান্য বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ফলে রপ্তানি কমছে। এ ছাড়া আগে ১০ পিস পোশাক কিনলে এখন ৫ পিস কিনছে বায়াররা।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মার্কিন শুল্ক অরোপের কারণে পোশাক রপ্তানি কমেছে। ক্রয়ক্ষমতার একটা বিষয় আছে। আগে ১০ পিস পোশাক কিনলে এখন ৫ পিস কিনে বায়াররা। ভারত-চায়না আমাদের ইউরোপের বাজারে নজর দিয়েছে। সেখানে তারা কম দামে পোশাক অর্ডার নিচ্ছে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, এখন কঠিন সময় পার করছেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। দেশের সার্বিক অনিশ্চয়তার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন করে রপ্তানি আদেশ দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন। সামনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে।