নওগাঁ, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও ঝিনাইদহে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) এসব হামলার ঘটনায় এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকেলে নওগাঁ শহরের বোয়ালিয়া এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নারী সদস্যদের নির্বাচনী উঠান বৈঠকে সাব্বির পাপ্পু নামে এক যুবক আকস্মিকভাবে প্রবেশ করে নারীদের সঙ্গে তর্কে জড়ায় এবং বৈঠক পণ্ড করার অপচেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে সে হামলাও চালায়।
অপরদিকে, নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের দেওটি ওয়ার্ডে জামায়াতে ইসলামীর নারীকর্মীদের এক কোরআন তালিমের ক্লাসের শুরুতেই বাধা দেয়। চেয়ার ভাঙচুর ও নারীদের হেনস্তা করে। কোরআন তালিম করতে আসা নারীদের জোর করে বের করে দেয়। দুর্বৃত্তদের বাধার কারণে কোরআন তালিমের ক্লাসটি হতে পারেনি।
এ ছাড়া, গত ২০ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকায় নারীকর্মীরা নিয়মিত গণসংযোগে বের হলে স্থানীয় বিএনপি নেতা আশরাফুল, হানিফ, শাহিন ও সবুজের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি দল লাঠি-সোঁটা নিয়ে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এতে ৫ নারী ও ৩ পুরুষসহ ৮ জন গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা কয়েকজন নারীর বোরকা খুলে নিয়ে লাঞ্ছিত করে। বর্তমানে আহতরা মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নির্বাচনী সমাবেশ, আলোচনা সভা, কোরআনের তালিম অথবা যে কোনো সভা-সমাবেশ আয়োজন এবং সেখানে অংশগ্রহণ করা এ দেশের সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। নারী কর্মীদের ওপর এসব বর্বরোচিত হামলা এবং জামায়াতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পণ্ড করার প্রচেষ্টা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফ্যাসিস্ট পরবর্তী সময়ে এ ধরনের হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। আমি এসব হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, নারী কর্মীদের উপর হামলা আমাদের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী স্টাইলের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যা অত্যন্ত ঘৃণিত ও নিন্দনীয়। বিএনপি কর্মীদের এ ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার জন্য বিএনপি নেতাদের অনুরোধ করছি। অন্যথায়, পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে এ দেশের সাধারণ জনগণ এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এই জামায়াত নেতা বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি বৈধ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী সহাবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাসী একটি নিয়মতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক দল। জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল ও সন্ত্রাসীরা নারী কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, আমি দুর্বৃত্তদের এসব হামলায় আহত নারী ও পুরুষ কর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি এবং তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। পাশাপাশি তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্য ও সংযম বজায় রেখে সাংগঠনিক ও গণতান্ত্রিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
গোলাম পরওয়ার অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সব দলের কার্যক্রম পরিচালনার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।