Image description
 

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ আসনের সম্ভাব্য হেভিওয়েট প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, এখন থেকে বাংলাদেশের মাটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোনো দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না। তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট পেলে তারেক রহমান হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

 

অতীতে সিলেট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত মরহুম খন্দকার আব্দুল মালেকের সন্তান মুক্তাদির এবারও একই জেলার ১ নম্বর আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। প্রবাসী প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে পৌঁছান।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সেদিন সন্ধ্যায় তার সম্মানে মিশিগান বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যানারে ‘গেট অব কলম্বাস’ হলে এক সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে সঞ্চালনা করেন ওয়াছিনুজ্জামান রনি। অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন মতাদর্শের প্রবাসী, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং সাধারণ নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। হল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়, প্রবাসীদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল পুরো পরিবেশ।

 

এসময় মঞ্চে আসীন হলে প্রবাসীরা তাকে ভালোবাসায় সিক্ত করে ফুলেল শুভেচ্ছা ও করতালিতে বরণ করে নেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতায় খন্দকার মুক্তাদির বলেন, “প্রবাসীরা এখনো দেশের টানে বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। যে কারণে আপনাদের আলাপ-আলোচনা ও চর্চায় বাংলাদেশ সবসময় জীবন্ত। আমরা দেশকে নিয়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে পরিকল্পনা নিয়েছি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনও স্থিতিশীল হতে পারিনি। তাই ৫ আগস্টের ঘটনার পর আমরা রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে একমত হয়েছি যে, ভবিষ্যতে দলীয় সরকার নয়—শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।”

 

তিনি বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি নির্বাচন হবে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। পার্লামেন্টে স্পিকার হবেন সরকারি দল থেকে, আর ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হবেন বিরোধী দলের সদস্যরা।”

খন্দকার মুক্তাদির আরও বলেন, “ধরা যাক বিএনপি ক্ষমতায়। পাঁচ বছর পর নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পর বিএনপিও থাকবে ক্ষমতার বাইরে। অতীতে এই ব্যবস্থায় কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক সংকটে যেই সরকার বিদায় নিয়েছিল, তারাই এই ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “এখন থেকে আজীবন একজন প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে (প্রতি মেয়াদে পাঁচ বছর) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সেটআপও সরকার ও বিরোধী দলের ঐকমত্যে গঠিত হবে।”

সিলেটের প্রবাসী ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে ও বিএনপিকে বিজয়ী করলে আমরা জনগণের সরকার গঠন করব।” বক্তব্যের পর তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বলেন, “বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে সিলেটসহ দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।”

এসময় তিনি মিশিগানে স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আশ্বাস দেন, এটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবেন। সমাবেশ শেষে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুক্তাদির বলেন, “জুলাই আন্দোলনের সাথে যুক্ত রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই, ছোটখাটো বিষয় এড়িয়ে ‘জুলাই সনদে’ স্বাক্ষর করুন। প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত।”