
শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীর সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে দেওয়া সমালোচনামূলক বক্তব্যের নিন্দার ঝড় উঠেছে। একটি ভাইরাল ভিডিওতে হেফাজতে ইসলামকে কটাক্ষ করে কিছু ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা যায় তাকে, যা ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠনটির নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে হেফাজতকে বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা নিজেদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে মন্তব্য করেন তরুণ এই ইসলামি বক্তা। বলেন, হেফাজত এখন ‘গরীবের বউ সবার ভাবী’র মতো হয়ে গেছে। এটা কষ্টের কথা।
রফিকুল ইসলাম মাদানী অভিযোগ করে বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এখন কয়েকটি ইসলামি দলের নেতারা নিয়ন্ত্রণ করছেন। হেফাজত যদি সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতো তাও ভালো ছিল, তাহলে এ দোটানার মধ্যে থাকতে হতো না।তিনি মেন্তব্য করেন, হেফাজত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ব্যহত হয়ে গেছে। কারণ উত্থানের সময় যে প্রভাব ও শক্তি ছিল সেটি এখন হেফাজতের নাই। এটাই বাস্তবতা।
তার এই ধরনের মন্তব্যকে অনেকেই হেফাজতে ইসলামের প্রতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং অবমাননাকর বলে মনে করেছেন। সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে রফিকুল মাদানীর বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তার বক্তব্যকে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর দাবি করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।রফিকুল ইসলাম মাদানী এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আলোচনায় এসেছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল।
নেটিজেনদের কেউ কেউ বলছেন, এসব মন্তব্যের কারণেই ওনারা সম্মানিত হয়েও লাঞ্ছিত হন। তার বক্তব্যের প্রতি দ্বিমত পোষণ করে কেউ লিখেছেন, মাথা মোটা হেফাজতের শক্তি না থাকলে স্কুলে গানের শিক্ষক বাদ দিতে বাধ্য করছে তোমার কোন...।আব্দুল্লাহ বিন হুসাইন লিখেছেন, ‘‘মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি আর কি! তুমি তো আগেই হেফাজত বিদ্বেষী ছিলা, এখনো আছো? তাহলে তোমার হেফাজত নিয়ে মাথা ব্যথা হওয়ার কী দরকার?’’
হেফাজত সমর্থক অলিউল্লাহ আল হাবিব লিখেছেন, তোমরা হেফাজতের কে? হেফাজত সম্পর্কে তোমরা কেন কথা বলবা? তোমরা আগেও ছিলে না, হেফাজতের সাথে এখনো নাই, সামনেও থাকার সম্ভাবনা নাই। তাই তোমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখন হেফাজতের পক্ষ থেকে তার মুক্তির দাবি জানানো হয়। বর্তমানে সেই হেফাজতকে নিয়ে তার এই বিরূপ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে বিভিন্ন মহল থেকে।