
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই সনদ’ সই হয়েছে। সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও চারটি বাম সংগঠন ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের নেতারা জুলাই জাতীয় সনদে সই করেছেন। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান শরিক দল এনসিপি বলছে, সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া এই সই শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।
এ নিয়ে আজ রাত সাড়ে ১০টার পর ফেসবুক পোস্টে সনদে সই না করার ব্যাখ্যা দেয় দলটি। এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া ওই ব্যাখ্যায় বলা হয়, “এনসিপি বলেছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দেখার পর সনদে সই করবে। কারণ এনসিপি জুলাই সনদকে স্রেফ রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল কিংবা ফাঁকা প্রতিশ্রুতি মনে করে না। এনসিপি মনে করে জুলাই সনদের প্রধানতম কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি নির্মূল এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তর। এ কারণে এই সনদের সুস্পষ্ট আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি থাকতে হবে বলে এনসিপি মনে করে।
রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ এক বছর ঐকমত্য কমিশনের সাথে কাজ করে জুলাই সনদ এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি প্রশ্নে একমত হয়েছে। জুলাই সনদ আদেশ> গণভোট> সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনে সক্ষম গাঠনিক ক্ষমতা সম্পন্ন আগামী সংসদ (দ্বৈত ভূমিকা)— এই প্রক্রিয়ায় সনদ বাস্তবায়ন হবে এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। অথচ সনদের অঙ্গীকারনামায় বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ নাই। এনসিপি মনে করে বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল। কারণ অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের করা প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভঙ্গ করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ এক বছর ঐকমত্য কমিশনের সাথে কাজ করে জুলাই সনদ এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি প্রশ্নে একমত হয়েছে। জুলাই সনদ আদেশ> গণভোট> সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনে সক্ষম গাঠনিক ক্ষমতা সম্পন্ন আগামী সংসদ (দ্বৈত ভূমিকা) — এই প্রক্রিয়ায় সনদ বাস্তবায়ন হবে এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। অথচ সনদের অঙ্গীকারনামায় বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ নাই। এনসিপি মনে করে বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল। কারণ অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের করা প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভঙ্গ করেছে।
এছাড়াও আরো তিনটি বিষয় এনসিপি উত্থাপন করেছে যা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া দেখেই সনদে স্বাক্ষর করবে এনসিপি।
১. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট এবং গণভোটের প্রশ্নটি চূড়ান্ত করে আগেই জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে।
২. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়ের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস জারি করবেন।
৩. গণভোটের মাধ্যমে জনগণ যদি জুলাই সনদে রায় দেয়, তবে নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকরিতা থাকবে না। গণভোটের রায় অনুযায়ী আগামী নির্বাচিত সংসদ তাদের উপর প্রদত্ত Constituent Power (গাঠনিক ক্ষমতা) বলে সংবিধান সংস্কার করবে। সংস্কারকৃত সংবিধানের নাম হবে: বাংলাদেশ সংবিধান, ২০২৬।
এ সকল বিষয়ের নিশ্চয়তা ছাড়া সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত হবে বলে এনসিপি মনে করে না। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লিখিত বিষয়সমূহের স্পষ্ট উল্লেখ নিশ্চিত করেই এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে।
অন্য কোনো কোনো দল বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের মূলনীতি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সনদে সই করেনি। তাদের সাথে এনসিপির সই না করার মৌলিক পার্থক্য সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব।”