Image description
রাজনৈতিক দলসহ সবার লিখিত মতামত চায় সরকার

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আবারও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠিও পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া আগ্রহী যে কেউ সরাসরি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাহফুজ আলমকে যে কোনো মাধ্যমে লিখিতভাবে অভিমত জানাতে পারবেন। এ জন্য ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। 

গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমকে এসব কথা জানিয়েছেন উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। নতুন করে মতামত চাওয়ায় জুলাই ঘোষণা ঝুলে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ ধরনের চিঠি পায়নি।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণা দেওয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয়েছিল। তবে ১৫ জানুয়ারির কয়েক দিন আগেই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ১৬ জানুয়ারি সর্বদলীয় বৈঠকের পরই জুলাই ঘোষণার দিন-তারিখ চূড়ান্ত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। এ নিয়ে তখন রাজনৈতিক অঙ্গনসহ দেশজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর রাত ৮টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির কয়েকজনকে নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যথাযথভাবে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় তারা এতে যোগ দেয়নি। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়– সরকার, নাগরিক কমিটিসহ সবাই মিলে জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি করবে। ওই দিনই মধ্যরাতে নাগরিক কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র পাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে ওই দিন মার্চ ফর ইউনিটি নামে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয় নাগরিক কমিটি। এটি সফল করতে দেশব্যাপী প্রচারণা-জনসংযোগ, লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি দেয়। পাশাপাশি নাগরিক কমিটি থেকে একটি ঘোষণাপত্রের খসড়া সরকারকে দেওয়া হয়। এর ওপর নির্ভর করে সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে সর্বদলীয় বৈঠকে বসেন। কিন্তু সেখানে কিছু ইস্যুতে মতৈক্য হলেও সব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এক হতে পারেনি বলে জানা যায়। বিশেষ করে, ঘোষণাপত্রের বিষয়ে বিএনপির দ্বিমত না থাকলেও ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু সম্পর্কে পুরোপুরি একমত নয়। ঘোষণাপত্রের চেয়ে তারা এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে চায়। এমন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আবার মতামত আহ্বান করা হলো। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় সংলাপের পরবর্তী কর্মপন্থা হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজন থেকে অভিমত নেওয়া হচ্ছে। অভিমত চিঠির মাধ্যমে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঠানো যাবে। এসব অভিমত পর্যালোচনা করে সংশোধিত ও সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জনগণের উপস্থিতিতে তা অনতিবিলম্বে ঘোষিত হবে।

এ প্রসঙ্গে এবি পার্টির মহাসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সমকালকে বলেন, অভিমত জানানোর বিষয়ে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো চিঠি তারা পাননি। একই কথা জানিয়েছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা।