
আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়নের বর্ণনা দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু করেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে দৃশ্যত আওয়ামী লীগ নেই। তবে তারা তলে তলে ঘাড়ের ওপর ওঠে বসে আছে।
মঙ্গলবার (১৪ আক্টোবর) বিকেলে নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্কাদিয়া ওবায়েদ চত্বরে দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা কথা বলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘গত ১৭ বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি। মার্ডার ও হরতালের মিথ্যা মামলায় সবাই জর্জরিত ছিল। আল্লাহ্ আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল বিধায় ১৭ বছরের আন্দোলনের একটা রেজাল্ট আমরা পেয়েছি। সেই রেজাল্টটা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ পালিয়েছে। এরপর দেশে আওয়ামী লীগ দৃশ্যত নাই। তবে তারা তলে তলে আপানাদের ঘাড়ের ওপর ওঠে বসে আছে। ‘
২০১৮ ও ২০২৪ সালে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তারা এখন ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে- এ কথা উল্লেখ করে শামা বলেন, ‘তারা এখন কাকে ভোট দেবে? তাদের ভোট ধানের শীষে বুঝিয়ে আনতে হবে।’
ধর্মের দোহায় দিয়ে জায়ামাত নেতাকর্মীরা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই নারীনেত্রী বলেন, ‘জামায়াতের নারী কর্মীরা ভোটারদের গিয়ে নাকি বলেন, ভোট দাও পাল্লায়, ভোট পাবে আল্লায়। নাউজুবিল্লাহ্, নাউজুবিল্লাহ্। ওনারা (জামায়াত) যেটা বলছেন, এটা কি কোনো মুসলমান বলতে পারে! এটা কেউ বলতে পারে না।’
এবারের নির্বাচন বিশেষ করে ফরিদপুরে সহজ হবে না বলে সতর্ক করেন বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের শহীদ জিয়ার দলকে শক্তিশালী করতে হবে। আপনারা ভাবতে পারেন আওয়ামী লীগ চলে গেছে। না, এতটা সহজ না। আমাদের বৃহত্তর ফরিদপুরে ভোট কখনোই সহজ ছিল না। ভোট সব সময় এখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ছিল। আর প্রতিপক্ষ যত ছোট বা বড়ই হোক, তাকে ছোট করে দেখা যাবে না।’
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘নগরকান্দা-সালথা আসন বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা। এই আসনে যদি নিজেদের ভুল ও অপকর্মের কারণে উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায়, তাহলে জাতীয়তাবাদী দলের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। সতরাং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে গ্রামে গ্রামে যেতে হবে। তবে যার যার কেন্দ্রের দায়িত্ব সেই সেই পালন করবেন। কেউ একা ভোট দিয়ে ধানের শীষকে জিতিয়ে দিতে পারবেন না। আমাদের সবাইকে লাগবে।’
সালথা-নগরকান্দা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন প্রসঙ্গ টেনে শামা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কোনো কমিটি হবে না। এবারের নির্বাচনে কার কতটুকু অবদান থাকে, সেটা দেখতে চাই। তারপর কমিটি গঠন করা হবে। অবশ্যই ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে।’
নগরকান্দা পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ছানোয়ার মাতুব্বরের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার, মাহাবুব আলী মিয়া, আলিমুজ্জামান সেলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল, সহসাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জাজরিস মাতুব্বর, আলমগীর হোসেন বকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফ, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান, যুবদল নেতা তৈবুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।
ঢাকাটাইমস