
শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহবান জানায় দলটি।
এনসিপির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চলমান এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। সরকারের বিশেষত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে শিক্ষকরা ক্লাসরুম ছেড়ে বারবার মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছেন, যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কোনোভাবেই কল্যাণকর নয়।
দলটি জানায়, একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে সবাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করবে এবং সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাবে—এটাই প্রত্যাশা। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই শিক্ষকদের দাবির ক্ষেত্রে সরকার শুধু কালক্ষেপণ করেছে; আর যখন শিক্ষকরা দাবি জানাতে রাস্তায় নেমেছেন, তখন সরকার পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়েছে! এই হামলার ঘটনায় আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি।
তারা আরও বলেন, একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এই দাবি আদায়ে এনসিপি শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে শিক্ষকদের সঙ্গে থেকেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে জাতীয় শহীদ মিনারে বক্তব্য রাখেন। শিক্ষকদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে এই লড়াই চালিয়ে যাব।
জাতীয় নাগরিক পার্টি মনে করে, স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও শিক্ষকদের অপমান করার যে প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে, সেই পুরোনো ও অকার্যকর ব্যবস্থা ভেঙে নতুন শিক্ষা-ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল, শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সেই আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়নি; বরং আমরা দেখেছি, বিগত আওয়ামী শাসনামলের শিক্ষা অব্যবস্থাপনার ধারাবাহিকতাই এই শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের দায়িত্ব হিসেবে ধরে নিয়েছে।
তারা আরও জানায়, জাতীয় নাগরিক পার্টি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও শিক্ষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। সে লক্ষ্যে আহ্বায়ক জনাব নাহিদ ইসলাম নতুন বাংলাদেশের ইশতেহারে ২৪ দফার মধ্যে শিক্ষাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র, সম্মানজনক বেতন কাঠামো তৈরির অঙ্গীকার করেছেন। আগামীর বাংলাদেশে সকল শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি শিক্ষকদের অধিকার, মর্যাদাপূর্ণ বেতন কাঠামো ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।