
ক্ষোভে ফুঁসছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবীরা। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতে দেওয়া হয়েছে কঠোর বার্তা। বিপথগামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সকল সদস্য নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আওয়ামী যুগে গণহত্যা সংঘটিত করেছেন, আদালতে অভিযুক্ত হয়েছেন সেই সব সদস্য এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় অভ্যুত্থানের সংগঠক, দেশের ছাত্রসংসদগুলো, শহীদ পরিবার ও আহত গাজীরা শক্ত বার্তা দিয়েছেন।
তারা বলছেন, কোনো বাহিনীর ভাবমূর্তির সঙ্গে অপরাধীদের সেফ এক্সিট কিংবা বিচার না হওয়ার সুযোগ নেই। দুনিয়াজুড়ে বাংলাদেশকে গ্রহণযোগ্য স্থানে পৌঁছাতে সেনাবাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই। গত বৃহস্পতিবার গুমের দুই মামলায় শেখ হাসিনা ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক ৫ প্রধানসহ ৩০ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আইজিপি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী প্রধানদের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
যদিও ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাহিনীটি। এর মধ্যে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (সিটিআইবি) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল কবির আহমেদসহ অভিযুক্তদের অনেকেই সেফ এক্সিট নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীজনরা ও হাসিনা যুগের নির্যাতিতরা বলছেন, হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকেই দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছিল। এর প্রভাব সেনাবাহিনীতেও পড়েছিল। সেফ এক্সিট দেওয়া হয়েছে ৬২৬ অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের। গুম কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মাত্র ১৩ কার্যদিবসে প্রায় ১৮শ’ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, রাজনীতিবিদ, মুক্তমনা ও সাংবাদিকরা।
অভিযুক্তদের বিচার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ইগো বা মর্যাদার প্রশ্ন নয়। এটি রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। দেশের সচেতন মানুষ, রাজনীতিবিদ সবাইকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার নিশ্চিতে আহ্বান করা হচ্ছে। যারা ইতোমধ্যে পালিয়ে গেছে তারা অনেকেই সরকারি কর্মকর্তা ব্যক্তি ছিলেন। সেইসব অপরাধীকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে অতিদ্রুত ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জোরদাবি দেশের সর্বস্তরের মানুষের।
জুলাই রেভ্যুলেশন দাবি করেছে, আয়নাঘরের মাস্টারমাইন্ড ও হাজারো গুম-খুনের নায়ক জিয়াউল আহসান পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সিরিয়াল কিলার তার হাতে এক হাজার মানুষকে খুনের মাইলফলক ছুঁয়েছে। তারা বলছেন, সঠিকভাবে বলতে গেলে সংখ্যাটা ১০৩০, যার সবগুলো কনফার্মড। দুই ও তিন নম্বরে আছে কলম্বিয়ার দুই সিরিয়াল কিলার লুইজ গারাভিতো এবং পেদ্রো লোপেজ। যাদের দুইজনের হাতে নিহতের সম্ভাব্য সংখ্যা ৩০০ প্লাস। কিন্তু, জিয়াউল আহসানই শেখ হাসিনার পালিত একমাত্র সিরিয়াল কিলার ছিল না। এর মধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের কথাই ধরি।
মেজর সিনহার খুনের দায়ে মৃত্যুদ- পাওয়া ওসি প্রদীপ টেকনাফে ২২ মাস থাকাকালীন তার হাতে ২০৪ জন খুন হয়েছেন। এই ২০৪ সংখ্যাটাও এখানে নিশ্চিত। অর্থাৎ, সিরিয়াল কিলারদের তালিকায় পেদ্রো লোপেজের পরের নামটাই কিন্তু প্রদীপের। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ দুই সিরিয়াল কিলারের দুইজনই বাংলাদেশের, দুইজনই সরকারি কর্মকর্তা এবং দুইজনই রাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্রে এই খুনগুলো করেছে।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে কয়েক হাজার এমন ক্রসফায়ারের ঘটনা আছে। একইসঙ্গে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই জুলাই অভ্যুত্থানে সরাসরি গণহত্যায় জড়িত বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিশ্ব গণমাধ্যমে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে সেগুলো অনেকটাই প্রমাণিত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেছেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনের দুটি মামলায় শেখ হ াসিনাসহ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হলেও প্রশাসন কর্তৃক তাদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ আমরা এখনো দেখতে পারিনি। বরং আসামিদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের বাইরে পালানোর চেষ্টা করছে বলেও আমরা গণমাধ্যম সূত্রে দেখতে পাচ্ছি।
জুলাই অভ্যুত্থানোত্তর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করার আহ্বা জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আমলে যে গুম, খুন, ক্রসফায়ার ও টর্চার সেলের সংস্কৃতি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে সেনাবাহিনীর একটি অংশের, বিশেষত র্যাব ও ডিজিএফআইয়ে দায়িত্বরত সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানকালেও আমরা সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে দেখেছি। মূলত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী আমলের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই তারা এই সকল মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়েছিল; যা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করেছে। জুলাই কেবল ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য হয়নি; বরং গুম-খুন-ক্রসফায়ারের সংস্কৃতি চিরতরে বিলুপ্ত করার জন্যও হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, গুম খুনের মাস্টারমাইন্ড স্বৈরাচার খুনি হাসিনা ও অভিযুক্ত জেনারেলদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। গুম, খুন, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে জড়িতদের বিচারের ক্ষেত্রে কোনো টালবাহানা সহ্য করা হবে না । গত পনেরো বছরের শাসনামলে সামরিক ও বেসামরিক কাঠামোকে ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
ওয়ালীউল্লাহ, আল মুকাদ্দাস, ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের অপেক্ষায় রয়েছে এখনো। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা দেশরক্ষার শপথ ও ইউনিফর্মের দায়িত্ববোধকে পদদলিত করে ফ্যাসিবাদের পদলেহনে মেতে উঠেছিল। অথচ এখন তাদের বিচার প্রক্রিয়ায় ষড়যন্ত্র চলছে।খুনি, ধর্ষক, গুম কারী যে পরিচয়েই থাকুক, তাদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেছেন, মানব াধিকার লঙ্ঘনকারী ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত বিপথগামী সেনা অফিসারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) লক্ষ্য করছে যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কয়েকজন সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও এখন পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, যা বিচার নিশ্চিতকরণে আশঙ্কা তৈরি করছে।
ডিজিএফআই, র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার নির্দেশে এসব মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন। এই অপরাধের দায় থেকে শেখ হাসিনা ও তার ফ্যাসিবাদী প্রশাসন কোনোভাবেই মুক্ত নয়। ফ্যাসিবাদের সময়ে পুরো রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ব্যবহার করে দেশে একটি মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন ইত্যাদির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীসহ, ডিজিএফআইয়ের সরাসরি অংশগ্রহণে এসব সংঘটিত হয়।
যারা স্পষ্টত অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের সঠিক বিচার নিশ্চিত না করতে পারলে আমরা ইনসাফের দিকে আগাতে ব্যর্থ হব এবং তা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে ব্যবহারের পথ পুনরায় তৈরি করবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ দ্রুত এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ফৌজদারি অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অপরাধের সহযোগী মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেছেন, সেনাবাহিনীকে সত্যিকারের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হলে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনে গুম, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বাংলাদেশে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছিল।
গুম কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মাত্র ১৩ কার্যদিবসে প্রায় ১৮শ’ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, নারী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির, জামায়াত, বিএনপিসহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এমনকি শিশুরাও এই নৃশংসতার থেকে বাদ যায়নি। এসব গুম, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে কেবল স্বৈরাচার হাসিনা ও তার আওয়ামী ফ্যাসিবাদই দায়ী নয়; এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ অনেক সদস্যরাও জড়িত।
গুমের পর আয়নাঘরে চালানো অমানবিক নির্যাতন সভ্য সমাজে ঘৃণিত ও নিন্দনীয়। সেনাবাহিনীকে সত্যিকারের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হলে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। এটি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ইগো বা মর্যাদার প্রশ্ন নয়; এটি রাষ্ট্র, গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। ‘চিহ্নিত অপরাধীদের সেফ এক্সিট তৈরির চেষ্টায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও, এখনো পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার কার্যকর করা হয়নি। এই বিলম্ব ও দীর্ঘসূত্রতা ন্যায়বিচারের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করছে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক গুরুতর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। গণঅভ্যুত্থানের পর ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের যে অঙ্গীকার জাতি করেছে, এই দায়মুক্তির সংস্কৃতি সেটিকে বিপন্ন করছে। বিগত স্বৈরাচারী আমলে কিছু বিচ্যুত কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণের কাছে সার্বভৌমত্বের প্রতীক, আস্থা, ভরসার একমাত্র জায়গা। সুতরাং অভিযুক্ত গুম, হত্যাকারী সেনা সদস্যদের প্রশ্রয় দিয়ে জনগনের মুখোমুখি দাঁড় করাবেন না। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রদর্শন করবে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি এই ইস্যুতে পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন, ১. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক গুম-খুনের দায়ে অভিযুক্ত ২৮ জনকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ০২. গুম-খুনে সরাসরি ইন্ডিয়ার সংশ্লিষ্টতা প্রতীয়মান হওয়ায় আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ সরকারকে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। ০৩. পিলখানা ও গুম কমিশন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পিলখানা কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কোনো ধরনের কাটছাঁট ছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। ৫. ক্যান্টনমেন্ট থেকে সেফ এক্সিট দেওয়া ৬২৬ জনসহ অন্য অপরাধীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে অতিদ্রুত ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
এক দফার ঘোষক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাদের অতিসত্বর গ্রেপ্তার করে বিচারের আওয়তায় আনতে হবে।’ সেনাবাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে। আমরা আশা করি, সেনানেতৃত্ব এ বিষয়ে সরকার ও ট্রাইব্যুনালকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। এটি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ইগো বা মর্যাদার প্রশ্ন নয়। এটি রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।