
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে আমি দুইবার গুমের শিকার হয়েছি। আয়নাঘরের মতো বীভৎস জায়গায় বন্দী ছিলাম। গুমের পর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনে হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে। তারা আমার হাত, কোমর ও আমার হাঁটু ভেঙে দিয়েছিল। দল করতে গিয়ে এইভাবে অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধায় বাঁশখালী উপজেলা সদর ও মিয়ার বাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রুপরেখা বাস্তবায়নে জনমত গঠন ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মফিজুর রহমান আশিক বলেন, আমার গুম হওয়া সময়ে আমাদের নেতা রুহুল কবির রিজভী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আমার পাশে দাঁড়ানোর কারণে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন ফিরে পেয়েছিলাম। সিটিসিসি আমাকে গুম করার পর মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। হয়তো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সেদিন যদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আমার পাশে না দাঁড়াত, তাহলে আজ আমার কোন হদিস থাকত না। এত এত নির্যাতনের পরও ভাঙা কোমর ও হাঁটু নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি। এই হাসিনার পতনে একটু হলেও আমার অবদান রয়েছে।
পথচারী ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, রাষ্ট্র যখন গভীর সংকটে, তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। তা নিঃসন্দেহে এদেশের মানুষের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ৩১ দফা রাজনৈতিক দল বা জোটের কর্মসূচি নয়, এটি দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র। তাই আমি সকল সহযোদ্ধা, জনগণ ও ছাত্রসমাজকে বলব আসুন আমরা সবাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই।
তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীর প্রভাবশালী সাবেক তিন ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত, বদরু, জসিম হায়দার তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করেছেন, ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেছেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বাঁশখালীতে এত বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী, অথচ ওইদিনের ঘটনায় এসব নেতারা কোন প্রতিবাদ করেননি। এমনকি ৫ আগস্ট পরবর্তী উল্টো তাদেরকে মামলা না দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তারা। আমি বাঁশখালী বিএনপির তৃণমুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলতে চাই, আমাদের আবেগ, উৎসাহ, অনুপ্রেরণার নাম হল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা যদি তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সম্মান রক্ষা করতে না পারি, তাহলে সেটা হবে দলের সাথে প্রতারণা।
আমাকে যদি বাঁশখালীতে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আমি বাঁশখালীকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলব। যেখানে থাকবে না রাস্তাঘাটের সমস্যা। থাকবে না দুর্নীতি। থাকবে না অত্যাচার নিপীড়ন। তাছাড়া আমাকে দিয়ে কোনো অনৈতিক কাজ হবে না। বেড়িবাঁধের টাকা লুটপাট কিংবা বালু উত্তোলনের অর্থ আত্মসাতের মতো কর্মকাণ্ডে জড়াবো না। কেউ অন্যের জায়গা দখল করতে পারবে না এবং মাদক ব্যবসার কোনো সুযোগ থাকবে না।
লিফলেট বিতরণকালে উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল মনছুর সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আশেক উল্লাহ, মো. ইমরানুল হক, উপজেলা যুবদল নেতা জুনাইদুল করিমসহ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।