Image description
 

চব্বিশ সালের গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলার আসামি হয়েও ফতুল্লার চার ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে আছেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও ফতুল্লায় এখনো প্রভাব বিস্তার করে আছেন গডফাদার শামীম ওসমানের অনুসারীরা।

 

ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি। সবাই আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এবং ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

 

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু একসময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ২০২২ সালে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং নৌকা প্রতীকে টানা পঞ্চমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে নৌকার হয়ে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গণঅভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা হয়। কিছুদিন পলাতক থাকার পর তিনি এলাকায় ফিরে এসে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় বিএনপির একটি অংশকে ‘ম্যানেজ’ করে এলাকায় অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

 

এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর র‍্যাব তাকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাউদ্দিন। তার বিরুদ্ধে পরিবহন চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দু’টি হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে।

 

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বক্তাবলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। তিনি আত্মগোপনে গেলে জেলা প্রশাসন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে আব্দুর রশীদকে দায়িত্ব দেয়। কিন্তু গত ২৫ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ইয়াসিন হত্যা মামলায় রশীদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে।

 

থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে দু’ডজন মামলা রয়েছে। এরপর কাশীপুর ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আহমেদ। তার বিরুদ্ধেও তিনটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপির একটি সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় তিনি চেয়ারম্যান পদে বসেছেন।

 

ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।’ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাছলিমা শিরিন বলেন, ‘এটা পুলিশের বিষয়। তারাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’