Image description
 
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শারদীয় দুর্গাপূজা-উত্তর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সেলিম জাহাঙ্গীর। ছবি : কালবেলা
 

জামায়াতে ইসলামীর কঠোর সমালোচনা করে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন, তোমরা একবার মুসলমানের কাছে বলো, বেহেশতের টিকিট নিতে হলে আমাদের জামায়াতে ইসলামে আসা লাগবে। হিন্দুদের কাছে গিয়ে কী বলবে, স্বর্গের টিকিটও আমরা দেব?

রোববার (০৫ অক্টোবর) রাতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ রাধা-গোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গাপূজা-উত্তর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সনাতন সংস্থা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে এ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম জাহাঙ্গীর জামায়াতের সমালোচনা করে আরও বলেন, যখন ব্রিটিশের কাছ থেকে বিভক্ত হতে চাইলাম, সেদিনও মওদুদী সাহেবের জামায়াতের বিরোধিতা করেছিল; কিন্তু তাদের বিরোধিতায় কিছু আসে যায়নি। ভারত-পাকিস্তানও স্বাধীনতা পেয়েছে। জামায়াত দালালি করে ঠেকাতে পারেনি।

 

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের বাঙালি জেগে উঠল। সে সময় আমাদের যুবক ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে নেমেছিল। দেশ স্বাধীন করেই তারা ঘরে ফিরেছিল। সেদিনও যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, হিন্দুদের বাড়ি দেখিয়ে তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছিল। আজকে তারা সাধু সেজে তাদের মনোগ্রাম থেকে আল্লাহর নাম মুছে দিচ্ছে। যাতে মানুষ বোঝে যে আমরা আর আগের মতো নেই। ওই ছবিতে নাম মোছা না মোছা নিয়ে কিছু আসে যায়, যদি চরিত্র না বদলায়।

 

তিনি আরও বলেন, দলের নাম জামায়াতে ইসলামী, তারা আবার হিন্দু শাখা করতেছে। তোমরা একবার মুসলমানের কাছে বলো, বেহেশতের টিকিট নিতে হলে আমাদের জামায়াতে ইসলামে আসা লাগবে। হিন্দুদের কাছে গিয়ে কী বলবে, স্বর্গের টিকিটও আমরা দেব। তোমাদের বলতে চাই, পৃথিবীর কয়টা দেশে জামায়াতে ইসলাম আছে। পাকিস্তান-বাংলাদেশ আর ভারতে কিছুটা আছে। তাহলে এই তিন দেশের বাইরে যেসব মানুষ আছে, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এরা কি বেহেশতে যাবে না?

সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, আজকে এখানে বলে দিলাম, আর কোনো তাড়াশ থানার মসজিদে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলবে না। আমরা যেমন মঞ্চে রাজনীতি করি, তোমাদেরও সেখানে ফিরে আসতে হবে। ভন্ডামি বাদ দিতে হবে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ইসলামিক জলসা হবে। মঞ্চসহ কবরস্থান-মসজিদে যেসব জলসা হবে, কোথাও রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে দেওয়া হবে না। রাজনৈতিক মঞ্চেই রাজনীতি নিয়ে বক্তব্য দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিষমডাঙ্গা বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর টুটুলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, তাড়াশ পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক তপন গোস্বামী, সনাতন সংস্থার সহসভাপতি সনাতন দাশ, সাধারণ সম্পাদক মৃদুল সরকার, আদিবাসী নেতা সুশীল মাহাতো, ধীরেন বসাক, বাসুদেব ওঁরাও, পরেশ মাহাতো, বিচিত্রা রানী, সনজিত মাহাতো প্রমুখ।