
পঞ্চগড়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে পাশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন সরাতে বলেন এক যুবদল নেতা। তাঁর মাধ্যমে যেন আওয়ামী লীগের কোনো লোকের পুনর্বাসন না হয়, সেই দাবিও তোলেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ওই যুবদল নেতার নাম হাসিনুর রহমান। তিনি ভজনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে সারজিস আলমকে লক্ষ্য করে হাসিনুর রহমান বলছেন, ‘আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকদের সরান। এই যে দেখেন, আমি দেখায় দিচ্ছি। আসেন, আপনি এগুলোকে সরান, এক্ষুনি সরান।’ জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘আমার জানামতে নাই।’ তখন হাসিনুর বলেন, ‘আছে, আমি দেখায় দিচ্ছি আপনাকে। আপনি তো এখন আমাদেরই লোক। আপনি নওশাদ ভাইয়ের (বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির) এলাকায় আসছেন, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি আওয়ামী লীগের লোকগুলোকে সরান।’
কিছুক্ষণ পর সারজিস আলম তাঁকে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলার প্রস্তাব দেন। এ সময় হাসিনুর তাঁর কাঁধে হাত রেখে এগোতে থাকেন, আর সারজিস আলমও তাঁর কাঁধে হাত রাখেন। এ সময় হাসিনুর রহমান বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আপনার ভূমিকা আছে। আমরা চাই, আপনি বড় নেতা হবেন। কিন্তু আপনার ডানে-বাঁয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন ঘুরছে।’ উত্তরে সারজিস আলম বলেন, ‘ভাই, আপনি এটা ভালো করে জানেন, যেদিন ওরা ফিরে এসে আপনাকে ধরবে, ওই দিন আমারও গলা কাটবে। এটা তো মানেন।’ পরে হাসিনুর বলেন, ‘ওরা যেন কোনোমতেই আপনার ছত্রচ্ছায়ায় পুনর্বাসন হতে না পারে।’ জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘এটা আমরা একসাথে করব।’ পরে তিনি হাসিনুরের সঙ্গে হাত মেলান এবং বলেন, ‘চলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে চা খাব।’
এ বিষয়ে সারজিস আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এইটা একদমই তার প্ল্যান। ইনটেনশনালি এ রকম করেছে। সে ওখানকার বিএনপির একটা ছেলে। প্রথমে এসেই ওই কথা বলছে। আরেকজনকে ভিডিও করতে বলছে। মানে একটা লোক ঠিক করছে ভিডিও করতে। আমি বলছি, কে দেখায় দেন। বলে, আছে একজন। ওই যে ছিল, বাইক নিয়ে চলে গেল। আমরা ভজনপুরে গেছি ব্যারিস্টার সাহেবের (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার) বাসার পাশে। সেখানে তো তাদের কিছু লোকজন আছে, ওরা হয়তো মনে করে যে কাউকে বিব্রত করাটা হইলো পলিটিকস। পরে আবার আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে চা-নাশতা খেয়েছে। সেখানে কিসের আওয়ামী লীগের লোক থাকবে? আমি আমার কমিটির লোকজন নিয়ে সেখানে গেছি।’