
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘যারা ভিন্ন ভাবে বা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রেম-প্রীতি করার চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য মঙ্গলজনক কিছু বয়ে নিয়ে আসবে না।’
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘চিকিৎসা সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিগত সরকারের আমলে গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মী, জুলাই আন্দোলনে আহত ও জটিল রোগে আক্রান্ত ২২ পরিবারকে 'আমরা বিএনপি পরিবার' এর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৯ শে (২০২৪ সালের) জুলাই ওবায়দুল কাদের (আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক) সাহেব প্রকাশ্যে বলেছে, ‘আমি নিরাপত্তা বাহিনীকে বলছি যে দেখামাত্রই আন্দোলনকারীদের গুলি করবেন'।
যারা নিজ দেশের সন্তানদেরকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়, তাদের আবার যদি প্রত্যাবর্তন ঘটে, আমরা যারা সেদিন আন্দোলনে ছিলাম, এখানে যারা বসে আছি, আমরা যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি, তাদেরকে কি রেহাই দেবে? আজকে যারা মনে করছেন গোপনে-গোপনে তাদের (আ. লীগের) সাথে আতাত করে নির্বাচনী বৈতরনী পার হবেন, তারাও কেউ রেহাই পাবেন না। তার পরিণাম আপনারা দেখেছেন নিউইয়র্কে। আপনার জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টের থেকে বেরিয়ে আসার সময়, সব নেতৃবৃন্দের সাথে তারা কি আচরণ করেছে!’
রিজভী বলেন, ‘আমি শুধু একটুই বলি, যারা আজকে বিভিন্ন বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছেন, কেউ আপনারা শেখ হাসিনার ক্রোধ থেকে রেহাই পাবে না, যদি তার প্রত্যাবর্তন ঘটে। তার প্রমাণ আজকে গভীর রাতের নিউইয়র্কের পরিস্থিতি।
সেখানে বাংলাদেশের বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘের একটি কর্মসূচিতে যাচ্ছেন দেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। সেক্ষেত্রে তারা সেখানে কি তান্ডব চালিয়েছে। ওদের অনুসূচনা নেই। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
আমার কাছে আজকে বিস্মিত লাগে, যে লুটেরা আবার বাংলাদেশকে লুট করার জন্য তাদের প্রচেষ্টার শেষ নাই। তাদের হিংস্রতার শেষ নেই।’
বিএনপির এই মুখপাত্র আরো বলেন, ‘সেদিনের (গণঅভ্যুত্থানে) আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, সেই সমস্ত রাজনৈতিক দল, আপনারা চিন্তা করুন, শুধুমাত্র আওয়াজ দিলে সবসময় কাজ হয় না। বড়-বড় কথা বললেই কাজ হয় না। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান যাতে না হয়, গণতান্ত্রিক শক্তির অভ্যন্তরীণ কোন মতভেদের কারণে।
তার (শেখ হাসিনার) যেনো প্রত্যাবর্ত না ঘটে, মাথার মধ্যে সেই চিন্তাটি রাখবেন। তার যদি প্রত্যাবর্তন ঘটে গণতান্ত্রিক শক্তি, বিরোধী কোন রাজনৈতিক দল, কোন সমালোচনা, গণতন্ত্রের কোনো লেশমাত্র সে আর রাখবে না। এটাকে একটা পরভৃত্তের দেশ বানাবেন। তিনি তার প্রভুদের কবজায় দেশকে রাখতে চাইবেন।’
নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে রিজভী বলেন, ‘সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। সামনে সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গাপূজা। এই পূজায় অতন্দ্র প্রহরীর মত আমাদেরকে সবসময় চোখ কান খোলা রাখতে হবে। নানা ধরনের উস্কানি, নাশকতা তৈরির চেষ্টা করবে। বিএনপির সকল নেতাকর্মী, অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী,
জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের যারা অংশগ্রহণ করেছেন, প্রত্যেককেই নির্ঘুম অবস্থায় থাকতে হবে। যাতে আমাদের দেশের একটি অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের ঝামেলা বা বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়।’