Image description

খুলনার পাইকগাছা পৌর বিএনপির সম্মেলনে পছন্দের প্রার্থীর হারের পর লাঞ্ছনার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক নেতা। শনিবার বিকেলে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

পাইকগাছায় আত্মহত্যাকারী মোশারফ হোসেন পৌর বিএনপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক। সম্প্রতি দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলে এই পদে হেরে যান তিনি। 

 
 

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার পাইকগাছা পৌর বিএনপির সম্মেলন হয়। এতে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মিরাজুল ইসলাম ও আসলাম পারভেজ। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন সেলিম রেজা লাকী ও কামাল আহমেদ সেলিম নেওয়াজ। মোশারফ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী লাকীর সমর্থনে প্রচার চালিয়েছিলেন। কিন্তু কাউন্সিলে লাকী হেরে যান। 

সেলিম রেজা লাকীর ভাষ্য, মোশারফ আওয়ামী লীগ আমলে অনেক অত্যাচার সহ্য করেও বিএনপির সঙ্গে ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত তিনি ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। বৃহস্পতিবার পৌর বিএনপির সম্মেলনের বিকেল তিনটার দিকে ঘোষিত ফলাফলে তিনি (লাকী) হেরে যান। এ খবরে মন খারাপ মোশারফ সম্মেলন স্থানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজের সমর্থকরা মোশারফকে গালাগালি করে। একপর্যায়ে তাঁকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন। আগেও তাঁকে অনেকবার ভয়ভীতি দেখানো হয়। অপমান সহ্য করতে না পেরে মোশারফ আত্মহত্যা করেছেন।

স্বজনেরা জানায়, শুক্রবার ভোরে মোশারফ কীটনাশক পান করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে খুলনা শহরের গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান। 

মোশারফের বন্ধু সাইফুদ্দিন সুমন বলেন, মোশারফ দলকে যেমন ভালোবাসতেন, তেমনই প্রচণ্ড আবেগী ছিলেন। তাঁর পক্ষের প্রার্থী হেরে যাওয়ায় খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন। একই সময় দলীয় কর্মীর হাতে লাঞ্ছিত হয়ে আরও ভেঙে পড়েন। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তাঁর বিষপানের খবর জানতে পারেন তিনি। 

পাইকগাছা পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ সেলিম নেওয়াজ বলেন, ‘সম্মেলনে ৫৯২ জন কাউন্সিলর সরাসরি ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচিত করেছেন। মোশারফ হোসেন কার পক্ষে ছিলেন, তা জানতাম না। পরে শুনেছি, তিনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন। তিনি হেরে যাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন কিনা, জানা নেই।’

পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ বলেন, মোশারফ আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্যাতিত হয়েছেন। এখন নিজ দলের কর্মীর হাতে লাঞ্ছিত হয়ে প্রচণ্ড কষ্ট পান তিনি।

পাইকগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইদ্রিসুর রহমান বলেন, পাইকগাছা পৌর বিএনপির সম্মেলনের পর এক বিএনপি নেতা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পেয়েছেন। তবে এর কারণ তারা জানেন না।