
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন বা ভোটের মাঠে অন্য দলের সঙ্গে জোট বা কোয়ালিশন করা কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হলে সময়মতো আমরা নেব। কিন্তু আমাদের কারও সঙ্গে এলাইন করে ভাবার সুযোগ নেই।
শুক্রবার রাজধানীর মিন্টু রোডে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির জাতীয় সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে দলটির বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটির শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। এছাড়া এনসিপির অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্য সব দল থেকে আমরা আলাদা। কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারছি না বলেই আমরা একটা নতুন রাজনৈতিক দল। আমরা বিএনপি পছন্দ করি না, জামায়াতে ইসলাম সমর্থন করি না, অন্য দলগুলোকেও এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত মনে করছি না। এ কারণেই আমরা সবাই মিলে নতুন একটা দল করেছি। ফলে আমরা আমাদের নিজেদের দল করব, নিজেদের পায়ে দাঁড়াবো—এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা কারও সঙ্গে যাব কিনা, সেটা আমাদের সেকেন্ডারি বিষয়। আমরা আমাদের পথচলায় এগিয়ে যাব। কেউ যদি আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তাদের স্বাগত জানানো হবে।
তিনি বলেন, এনসিপি একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল, তার একটি স্বতন্ত্র লক্ষ্য ও আদর্শ রয়েছে। সেই লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব। আমরা নিজেদের মাটি শক্ত করে প্রতিষ্ঠিত হব। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ফলে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, আমরা জোটে যাব কিনা, তাহলে সে বিষয়ে আমাদের অবস্থান—এনসিপি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করবে, নিজের রাজনীতি করবে।
সভা শেষে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এনসিপি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই এগোবে। কোনো রাজনৈতিক দল যদি মনে করে, এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে তারা একমত, তাহলে তারা আমাদের সঙ্গী হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, জামায়াত ইসলামের নেতৃত্বে যে যুগপৎ আন্দোলন হচ্ছে, সে আন্দোলনে এনসিপি নেই। কারণ নিম্নকক্ষে আমরা পিআর চাই না। এর বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছি। আমরা শুধু উচ্চকক্ষ পিআর এবং একটা জবাবদিহিতার জন্য একটি কার্যকর উচ্চকক্ষ চাচ্ছি। ফলে সেটাকে নিশ্চিত করেই যেন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হয়। ফলে আমরা এই মুহূর্তেই কোনো জোট ভিত্তিক চিন্তাভাবনা করছি না।
তিনি আরও বলেন, দ্রুত সাংগঠনিক বিস্তারের নির্দেশনা দিয়েছি। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই আমাদের প্রত্যেকটি জেলা–উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যন্ত আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে। সমন্বয়কারী কমিটি থেকে আহ্বায়ক কমিটিতে রূপান্তর হবে।
ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা এবং নতুন সংবিধানের জন্য এনসিপি আগামী দিনে কর্মসূচি নেবে। আমরা জুলাই পদযাত্রায় যেরকম জেলা সদরভিত্তিক কর্মসূচি নিয়েছিলাম, এবার আমরা উপজেলাভিত্তিক কর্মসূচি নেব। আমরা প্রত্যেকটা উপজেলায় যাব। ইতোমধ্যে ‘উঠান বৈঠক’ নামে একটি কর্মসূচি চলমান আছে গ্রাম এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে। আমরা এবার উপজেলাভিত্তিক কর্মসূচিতে যাব।
দলের নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, নিবন্ধনের বিষয়টিও আমাদের জানানো হয়েছে। নিবন্ধন পেতে যাচ্ছি। প্রতীকের বিষয়ে আমাদের কিছু বলা হয়নি। আমরা যখন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তারা কোনো আইনে যুক্তি দিতে পারেননি। বলেননি কেন শাপলা প্রতীক দেওয়া যাবে না। ফলে আমরা আশা রাখছি, শাপলা প্রতীক পাব।