
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ বইছে সিলেটে। চলছে নানা হিসাব। বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। ভোটের এই সমীকরণে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। তাদের সংখ্যা অন্তত ১০ জন। তাদের ঘিরে নির্বাচনের মাঠে আলাদা আবহ বিরাজ করছে। আর মাঠে নজর কাড়তে জান-প্রাণ দিয়ে কাজ করছেন এসব নেতা। তাদের প্রায় সকলের হাতেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা। সেটিকে তারা দেশের মানুষের ‘মুক্তির সনদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। তাদের নির্বাচনী প্রচারণার বদৌলতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘোষণা প্রান্তিক জনপদে গিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে মনোনয়ন টিকিট পেতে ভোটের মাঠেই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন প্রার্থীরা। দেয়া হচ্ছে শোডাউনও। তবে সাবেক এই ছাত্রদল নেতারা যেদিকে যাচ্ছেন পাচ্ছেন সাড়াও। কারণ দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে তারা জনগণের কাছাকাছি ছিলেন। মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে কারাবরণও করেছেন। আন্দোলনে তারা পেয়েছেন জনগণের সহযোগিতাও। ফলে ভোটের মাঠে তারা জোয়ার তুলতে পারছেন সহজেই। সিলেট জেলায় ৬টি নির্বাচনী আসনে ভোটের মাঠে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ ওরফে চাকসু মামুন, জেলা বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, নগর স্বেচ্ছাসেবকদল আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ভিপি মাহবুব ও জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আল আসলাম মুমিন। নিখোঁজ থাকা ইলিয়াস আলীর কমিটির ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ছিলেন আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী।
পরবর্তীতে তিনি যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সভাপতি ছিলেন। বিগত কমিটিতে তিনি জেলা বিএনপি’র সভাপতি হয়েছেন। সিলেট-৩ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন চাইছেন তিনি। ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে তিনি নজরকাড়া কয়েকটি শোডাউন দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডনে পাড়ি দেয়ার আগে জেলা ছাত্রদলের একাধিক পদে আসীন ছিলেন। ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতিও। তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। সিলেটে ছাত্রদলকে এগিয়ে নিতে তার ভূমিকা ছিল। সিলেট-৩ আসনে তিনি বিএনপি’র মনোনয়ন চাইছেন। ব্যারিস্টার সালাম নিজের নির্বাচনী আসনে নানা প্রচারণায় ভোটারের নজর কেড়েছেন। সিলেট-৪ আসনের বিএনপি’র মনোনয়ন চাইছেন এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মিফতাহ সিদ্দিকী। ছাত্রদল ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকার কারণে এবার সিলেট-৪ আসনে তিনি ভোটারের মধ্যে ধানের শীষের জোয়ার তুলতে সক্ষম হয়েছেন। এখন যেদিকেই যাচ্ছেন ভোটারের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। সিলেট-৫ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও চাকসু নির্বাচনে বিজয়ী মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ভোটের মাঠে তাকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ফয়সল আহমদ চৌধুরী সিলেট-৬ আসনে বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। এবারো মনোনয়ন দৌড়ে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। সিলেট-৬ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আরেক প্রার্থী এমরান আহমদ চৌধুরীর ছাত্রদলের ব্যাকগ্রাউন্ড উজ্জ্বল। তিনি জেলার সভাপতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতিও ছিলেন। ভোটের মাঠে তাকে নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখায় তৃণমূলে তার গ্রহণযোগ্য রয়েছে।
সিলেট-৫ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন চাইছেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাপলু। তিনি জেলা যুবদলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটে চোখে পড়ার মতো শোডাউন দিয়েছেন। সিলেট-৩ আসনের ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ছাত্রদলের সাবেক সহ- সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আহাদ খান জামাল। বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে তিনিও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। ইতিমধ্যে তিনিও কয়েকটি শোডাউন দিয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী ভিপি মাহবুব সিলেট-৫ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন চাইছেন। তিনি এলাকায় ভোট প্রচারণা সহ দলীয় কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখছেন। সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা এডভোকেট আল আসলাম মুমিন সিলেট-৪ আসন থেকে মনোনয়ন চাইছেন।