Image description

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহবায়ক আল আমিন ইসলামের নেতৃত্ব নিয়ে সংগঠনটির মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। দশ বছর আগে শিক্ষাজীবন শেষ হওয়া আল আমিন এখনো পদ আঁকড়ে বসে আছেন। যা নিয়ে সংগঠনের ভেতরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিতর্ক।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বর্তমান আহ্বায়ক আল-আমিন ইসলাম ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় আগে শিক্ষাজীবন শেষ হলেও তিনি এখনো আহ্বায়ক পদে বহাল। শুধু তাই নয়, বর্তমানে তিনি রংপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। এই সেশনের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে গেছেন আরও দশ বছর আগে। করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি। 

জানা যায়, ২০২১ সালে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে আল-আমিন ইসলামকে আহ্বায়ক এবং রসায়ন বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদ মণ্ডলকে সদস্য সচিব করা হয়। কিন্তু ওই কমিটিতে অধিকাংশ সদস্যই শিক্ষার্থী নন। কেউ চাকরিজীবী, কেউ জেলা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্ররা বলছেন, এ ধরনের অছাত্র ও বাহিরের নেতাদের নিয়ে গঠিত কমিটির কার্যক্রম ‘নামমাত্র’। জেনারেশন গ্যাপের কারণে তারা শিক্ষার্থীদের পালস বুঝতে পারছেন না। রংপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি এবং জেলা কমিটির নেতা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে রাজনীতি করে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ছাত্রদলের কমিটির দাবি তাদের।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত কর্মী এ কমিটি বাতিলের দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই নেতৃত্বে দল জড়িয়ে পড়েছে স্থবিরতায়। ভালো কাজের থেকে তারা বিতর্কে বেশি জড়িয়ে পড়ছেন।

ছাত্রদলের একাধিক সূত্র জানায়, কমিটি গঠনের পর থেকে ক্যাম্পাসে তাদের তেমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। বরং ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করেই আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে কিছু কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়; যা অনেকের কাছে ‘অসাংগঠনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মনে হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নির্যাতিত ছাত্রদল কর্মী জানান, ‌‌‌‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে দ্রুত নতুন কমিটি গঠন করা জরুরি। আমি নিজে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছি; আমাকে হলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কমিটির কাউকে পাশে পাইনি। এখন হঠাৎ ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি বদলালে তাদের দেখা যাচ্ছে; এটা কি তাহলে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু?’

তিনি বলেন, ‘আমরা আর কোনো ‘আদু ভাইয়ের’ নেতৃত্ব চাই না। এমন নেতৃত্ব চাই, যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী এবং মাঠের কর্মীদের পাশে থাকেন। তরুণদের সামনে এনে একটি কার্যকর ও গতিশীল কমিটি গঠন করতে হবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক আল আমিন ইসলাম বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছাসেবক দলে আছি এটা সারা দুনিয়া জানে। এর আগেও অনেকবার নিউজ হয়েছে। আপনারা যা ইচ্ছা লেখেন। এটা কেন্দ্রও জানে। কতদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক দলে রয়েছি, সেটা কেন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করেন।’