Image description

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর)।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক এবং সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের সেভ গার্ড হিসেবে জাকসুর ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতুকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। জুলাই হামলায় শিক্ষকদের যে বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে তাও ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা দুই ভাগে বিভক্ত থাকলেও এখন এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বিষয়টির সমন্বয় করছেন। নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক লুৎফুল এলাহীও একইভাবে দূর থেকে সমন্বয় করছেন। জিতুকে ঘিরে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। 

গত দুদিন আগে সাভারের সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা জিতুকে প্রদান করেন। তিনি ভারতে বসে এখানকার রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করছেন। অর্থ পেতে সাইফুল ইসলামের কাছের বড় ভাই রাশেদুল ইসলাম যার সাথে অধ্যাপক সোহেলের খুব ভালো সম্পর্ক তিনি সহযোগিতা করেছেন।

 

একই সাথে সাভারের আল মুসলিম গ্রুপ থেকেও বিপুল অর্থ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টির সমন্বয় করেছে সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বর্তমান এনসিপি নেতা মেহেরাব সিফাত। তিনি ঢাকা ১৯ আসনের এমপি প্রার্থী। জিতুকে ভিপি বানিয়ে মেহেরাব সিফাতকে এমপি হতে সহযোগিতা করবে, একই সাথে তার রাজনৈতিক পরিসর ঘটাবে। একই সাথে সিফাতের বান্ধবি জান্নাতুল ফেরদৌস আনজুম সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেত্রী তাকে তার প্যানেলে দেয়া হয়েছে। 

 

এদিকে জিতুর নির্বাচনী প্রচারণায়ও দেখা গেছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতি। প্রচারণায় দেখা গেছে ভাসানী হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্লকে থাকা আমিনুর শাওন, আল বেরুণী হলের সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল সানী ও তানজিম শাহরিয়ার মাহিন, শেখ মুজিব হলের সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী সজল আহমেদ, আমিনুল হক ইমনসহ আরও অনেককে। এছাড়া তার প্যানেলে জায়গা পেয়েছে সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী জান্নাতুল ফিরদাউস আনজুম এবং সাবেক হল ক্যান্ডিডেট আলভি নিতুল। এছাড়া অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা শেখ মুজিব হলের নাম মুছে দিলে সেই নাম ফিরে পাওয়ার দাবি জানানো তানজিদ রিচ।

সবমিলিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী এবং জুলাই হামলায় যাদের বিচার হয়নি, তাদের ভালো সহযোগিতা পাচ্ছেন জিতু এবং তাদেরকে নিয়ে হলের ছোট ছোট গ্রুপে কাজ করছেন তিনি। সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিফাত, আমিনুর যোগাযোগ রাখছেন তার সাথে। সমন্বয় করে সনাতনী শিক্ষার্থী এবং মাদকাসক্তদের ভোট পাবেন তিনি। এদিকে বামপন্থী সংগঠনও তাকে জিতিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে তার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, জিতু ভাই টাকা দিয়ে ভোট কিনছেন। সন্ধ্যা নামলেই সিসি ক্যামেরা নেই এমন জায়গাগুলোতে গিয়ে ভোটারদের নিয়ে বসছেন। সুযোগ বুঝে টাকা দিচ্ছেন।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে প্রচারণার বিষয়ে জানতে জিতুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।