Image description
 

যুবদল নেতার চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের নামে মামলা করেছে এক যুবদল নেতা। আমার দেশ কুমিল্লা প্রতিনিধি এম হাসানের নামে মামলা দায়ের করেন যুবদল মাহাবুল আলী রাশেদ। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

 

১০ আগস্ট কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রাশেদ। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল কাইয়ুমের ছোট ভাই।

 

 

বিতর্কিত এ মামলার খবর প্রকাশিত হতেই স্থানীয় সাংবাদিক মহল ও সচেতন সমাজে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর আগে বিভিন্ন পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।

আমার দেশে ৩ আগস্ট ‘বিএনপি নেতাদের মাসোহারা দিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয় শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ডকে অবৈধ বাণিজ্যিক কেন্দ্র বানায় আওয়ামী লীগাররা। সেখানে দলটির নেতাকর্মীদের কেউ কেউ অবৈধভাবে পরিচালনা করছে নিজস্ব পরিবহনের বাস, আবার কেউ গড়ে তুলেছেন চাঁদাবাজির চক্র। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ প্রায় সব বড় নেতা ও সন্ত্রাসী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছে কিন্তু চাঁদাবাজির রাজত্ব অক্ষত এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই চক্র। এই কাজে তারা পেয়েছে বিএনপির কয়েকজন স্থানীয় নেতার প্রচ্ছন্ন মদত। বিনিময়ে তাদের নিয়মিত দেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের কমিশন।

এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম তার নেতৃত্বে প্রতিমাসে তোলা হচ্ছে কোটি টাকার বেশি চাঁদা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে আওয়ামী লীগ নেতা তাজুল ইসলাম ১৬ বছর ধরে কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পদ দখল করে আছে ‌ গত পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার বহু নেতা কর্মী পালিয়ে গেল বহাল তবিয়তে আছেন কুমিল্লা সদর আসন সাবেক এমপি বাহার একনিষ্ঠ কর্মী তাজুল ইসলাম ।

 

আমার দেশ প্রতিনিধির কাছে তথ্য প্রমাণ আছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদল যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহাবুল আলম রাশেদ শাসনগাছা বাস স্ট্যান্ড থেকে টাকা উঠিয়ে তার ভাই বিএনপি নেতা রেজাউল কাইয়ুমকে প্রদান করেন। ভুক্তভোগীদের কয়েকটি অডিও রেকর্ড আমার দেশ এর কাছে আছে।

 

কুমিল্লা সাতরা এলাকার বাসিন্দা সাহিদুল ইসলাম চাঁদাবাজির অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন গাড়ি থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নেয়। পাপিয়া থেকে মাসে ৫০ হাজার টাকা নেয়। এগুলো কারা নেয়? তখন তিনি বলেন বিএনপি নেতা রেজাউল কাইয়ুম ছাড়া কি গাড়ি চলতে পারবে? রেজাউলের টাকাগুলো তার ভাই যুবদল নেতা রাশেদ কালেক্ট করে শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড থেকে।

 

কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনামূল হক ফারুক বলেন, কোন নিউজের বিষয়ে উনার আপত্তি থাকলে উনি প্রতিবাদ লিপি দিতে পারে। উনি যে হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করেছে এজন্য আমি কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই।

 

কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মাসুক আলতাফ চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা এটা আরো একটা অপরাধ। মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করা যাবে না।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন কুমিল্লার সভাপতি শাহ আলমগীর খাঁন বলেন, সংবাদকর্মী সংবাদ প্রকাশ করার পর যদি তার বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক আচরণ করা হয় । আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে হয়রানি করা হয় এটা ঠিক নয়। এটা সমাজ এবং প্রশাসনকে নজর দেওয়া উচিত । আমি অনুরোধ করব যারা যেই দলই করুক তাদের আরো সচেতন হওয়া উচিত।