
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রচারের সময় বাকি আর একদিন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। এর আগে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সর্বশেষ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত সে নির্বাচন নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল অনেক।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩৮ হাজার ৪৯৩ জন শিক্ষার্থী। তবে কত জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের ছাড়া ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সমর্থিত ও সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন। এ বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ডাকসু নির্বাচন, যেটি ছিল ১৯৯০-এর পর প্রথম।
নির্বাচনে ভিপি পদে ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের প্রার্থী নুরুল হক নূর। তার চেয়ে ১ হাজার ৯৩৩ ভোট কম পেয়ে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পরাজিত হন। তিনি পেয়েছিলেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট। তৃতীয় স্থানে ছিলেন স্বতন্ত্র জোট প্যানেলের প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান, পান ২ হাজার ৬৭৬ ভোট। বাম জোটের প্রার্থী ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী ১ হাজার ২১৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে ছিলেন। আর ছাত্রদলের প্রার্থী পঞ্চম স্থানে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান পান ২৪৫ ভোট।
২০১৯ সালের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩৮ হাজার ৪৯৩ জন শিক্ষার্থী। তবে কত জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের ছাড়া ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সমর্থিত ও সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন।
বাকি ২১ জন ভিপি প্রার্থীর মধ্যে একশ’র বেশি ভোট পান মাত্র একজন। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের এস এম আতায়ে রাব্বী ১১২ ভোট পান। এ ছাড়া ছাত্র মৈত্রীর রাসেল সেখ ২২ ভোট, জাসদ ছাত্রলীগের রাকিবুল ইসলাম তুষার ২৪, বাংলাদেশ জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ-বিসিএলের নাইম হাসান ৩৯ আর সবচেয়ে কম ৭ ভোট পান জাতীয় ছাত্র সমাজের নকিবুল হাসান।
জিএস পদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পেয়েছিলেন ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ হাজার ৪২১ ভোট কম পান। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাধারণ শিক্ষার্থী পরিষদের রাশেদ খান ৬ হাজার ৬৩ ভোট পেয়েছিলেন। তৃতীয় স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের প্রার্থী সাংবাদিক সমিতির আসিফুর রহমান ত্বাসীন ৪ হাজার ৬২৮ ভোট পান।
এ ছাড়া অরণি সেমন্তির নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র জোটের শাফী আবদুল্লাহ ১ হাজার ৫১২, ছাত্র ফেডারেশনের উম্মে হাবীবা বেনজির ৬০৬, তার পরিবর্তে বাম জোটের প্রার্থী হওয়া ফয়সাল মাহমুদ সুমন ২৪৭ ভোট পান। আর ছাত্রদলের আনিসুর রহমান রহমান অনিক পেয়েছিলেন ৪৬২ ভোট। পাশাপাশি ছাত্র মৈত্রীর সনম সিদ্দিকী শিতি ৪৬, জাসদ ছাত্রলীগের শাফিকা রহমান শৈলী ৯৫, বাংলাদেশে ছাত্রলীগ-বিসিএলের শাহরিয়ার রহমান বিজয় ৪৪ ভোট পান। ১৪ জন জিএস প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম ৩০০ ভোট পানন জালাল আহমেদ।
এজিএস পদে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৩০১ ভোট পান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ব্যবধান ছিল ৯ হাজার ৪০৫ ভোট। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ফারুক হোসেন ৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র জোটের অমিত প্রামানিক ১ হাজার ৪৫২, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের আবু রায়হান খান ৬২৯, ছাত্রদলের খোরশেদ আলম সোহেল ২৯৪, বাম জোটের প্রার্থী ছাত্রফ্রন্টের সাদেকুল ইসলাম সাদিক ২৮৪ এবং মুক্তিজোটের অনুপ রায় ২৫১ ভোট পান।
ছাত্র মৈত্রীর রহমত উল্লাহ ৪৩, জাসদ ছাত্রলীগের জহুরুল ইসলাম ৬২, ছাত্রলীগ-বিসিএলের আশরাফুল আলম ফাহিম ৯৬ ভোট পেয়েছিলেন। এজিএস পদে ১৩ প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পান শাহিদুল ইসলাম, ২৩টি।
অন্য পদগুলোর মধ্যে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের সাদ বিন কাদের, ভোট পান ১২ হাজার ১৮৭টি। তার নিকটতম শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের নাজমুল হুদা পান ৩ হাজার ৯৯১ ভোট। ছাত্রদলের জাফরুল হাসান নাদিম ৩০০ ভোট পান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক বিজয়ী হন ছাত্রলীগের আরিফ ইবনে আলী (৯ হাজার ১৫৪ ভোট)। নিকটতম সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের মশিউর রহমান (৬ হাজার ৩২৩ ভোট)। কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের বিএম লিপি আক্তার (৮ হাজার ৫২৪ ভোট)। নিকটতম ছাত্রদলের কানেতা ইয়া লাম-লামের ভোট ছিল ৭ হাজার ১১৯টি।
আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের শাহরিমা তানজিনা অর্নি (১০ হাজার ৬০৪ ভোট)। নিকটতম সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের হাবীবুল্লাহ বেলালী পান ৪ হাজার ৩৬৭ ভোট)। সাহিত্য সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের মাজহারুল কবির শয়ন (১০ হাজার ৭০০ ভোট)। নিকটতম শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের আকরাম হুসাইন পান ৫ হাজার ১৮ ভোট। সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের আসিফ তালুকদার (১০ হাজার ৭৯৯ ভোট)। নিকটতম শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের নাহিদ ইসলাম ৩ হাজার ৫৮৪ ভোট পান। ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিজয়ী হন ছাত্রলীগের শাকিল আহমেদ তানভীর (৯ হাজার ৪৭ ভোট)। দ্বিতীয় হন স্বতন্ত্র জোটের খালেদ মাহমুদ আকাশ (৩ হাজার ৮৩৪ ভোট)।
ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে বিজয়ী ছাত্রলীগের শামস ই নোমান (১২ হাজার ১৬৩ ভোট)। নিকটতম স্বতন্ত্র জোটের তাওহিদ তানজিম পান ২ হাজার ৮৪৫ ভোট)। সমাজসেবা সম্পাদক পদে বিজয়ী সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের আখতার হোসেন (৯ হাজার ১৯০ ভোট)। নিকটতম ছাত্রলীগের আজিজুল হক পান ৮ হাজার ৮১ ভোট।
এছাড়া সদস্য পদে চিবল সাংমা (১২ হাজার ৮৬৮), নজরুল ইসলাম (৮ হাজার ৫০৯), রাকিবুল হাসান (৮ হাজার ৬৭৩), রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য (১১ হাজার ২৩২), তানভীর হাসান সৈকত (১০ হাজার ৮০৫), রাইসা নাসের (৯ হাজার ৭৬৮), সাবরিনা ইতি (৯ হাজার ৪৫০), রফিকুল ইসলাম সবুজ (৬ হাজার ৫১৭), ফরিদা পারভীন (৮ হাজার ৪৬৯), নিপু ইসলাম তন্বী (১০ হাজার ৩৯৩), সাইফুল ইসলাম রাসেল (৭ হাজার ৮১২), তিলোত্তমা শিকদার (১০ হাজার ৪৬৬) ও মাহমুদুল হাসান (৭ হাজার ৯৭৮)।