Image description
 

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর কারণ, সম্প্রতি দ্বিমোনার মরুভূমিতে অবস্থিত ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক কেন্দ্র 'শিমন পেরেজ নেগেভ নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টার'-এ অস্বাভাবিক তৎপরতা দেখা গেছে। স্যাটেলাইট চিত্রে সেখানে বিশাল কংক্রিটের প্রাচীর, উঁচু ক্রেন এবং ভূগর্ভস্থ স্থাপনার নির্মাণ কাজ স্পষ্ট হয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নির্মাণ কাজ কোনো শান্তিপূর্ণ প্রকল্প নয়। এটি হয়তো একটি নতুন হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর, যেখানে পারমাণবিক বোমার মূল উপাদান প্লুটোনিয়াম তৈরি হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি অস্ত্র সংযোজনের কেন্দ্র, যেখানে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ চলছে।

কেন এই সময়ে নির্মাণ কাজ?
মাত্র কিছুদিন আগেই ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে। ১৩ জুনের সেই হামলায় ইরানের সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ নিহত হন। এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ও পারমাণবিক অস্ত্র প্রসার রোধ চুক্তি (Nuclear Non-proliferation Treaty) প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

এই প্রেক্ষাপটে, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলের দ্বিমোনার নির্মাণ কাজকে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেখছেন। কারণ এই স্থাপনায় কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা বেসামরিক গবেষণার প্রমাণ নেই।

 

ইসরায়েলের 'ইচ্ছাকৃত অস্পষ্টতা' কৌশল
অনুমান করা হয় যে ইসরায়েলের কাছে ইতোমধ্যেই ২০০ থেকে ৪০০ পারমাণবিক ওয়ারহেড মজুদ আছে। এমনকি তারা বোমার বিস্ফোরণ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়ানোর জন্য ট্রিটিয়ামও উৎপাদন করে। কিন্তু ইসরায়েল কখনো তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার করে না। এটি তাদের কৌশল, যা 'ইচ্ছাকৃত অস্পষ্টতা' (Deliberate Ambiguity) নামে পরিচিত।

যখন ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় প্রতিটি দেশ আন্তর্জাতিক পরিদর্শনের আওতায় আছে, তখন একমাত্র ইসরায়েলই কোনো আন্তর্জাতিক পরিদর্শনে অংশ নেয় না বা কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি মানে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধ সমর্থনের কারণেই এটি সম্ভব হচ্ছে। এই নীরবতা কতদিন টিকে থাকবে এবং এর পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।