Image description
 

নানা জল্পনা কল্পনা পর অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ৩৮ হাজারের বেশি ভোটারের উপস্থিতিতে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। 

 

সব প্রার্থীই তাদের নিজস্ব কৌশল ব্যাবহার করে দিনরাত পরিশ্রমের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। দলীয় এবং স্বতন্ত্র মিলে ১০টি প্যানেলেই তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তবে সব প্যানেলের ইশতেহারই প্রায় কাছাকাছি। কারো প্যানেলই ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। ভোটারদের কাছে আলোচনায় ব্যাক্তি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিগত দিনে প্রার্থীর অবদান, জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে শিক্ষার্থীরা যোগ্যতার মানদন্ড হিসেবে বিবেচনা করছেন। 

তবে সবকিছু মিলিয়ে ভিপি, জিএস এবং এজিএস পদে নির্বাচনে তুমুল লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। হাড্ডাহাড্ডি এ নির্বাচনে কোন প্যানেলের প্রার্থী কিংবা কোন প্রার্থী জিতবেন তা আগে থেকে বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্বাচনে জয় পরাজয়ের হার হবে খুবই সামান্য। আর এজন্যই প্রত্যেক প্রার্থীই কঠোর পরিশ্রম করছেন। 

 

শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা হলে সীট সংকট, নিন্মমানের খাবার, সিনিয়রদের র‌্যাগিংসহ নানান সমস্যার সমুখ্খীন হতে হয়। বিশেষ করে হলে সীট সংকটের কারণে গ্রাম থেকে আসা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ছাত্র নেতাদের সরণাপন্ন হতে হয়। গত ১৫ বছরে হলের প্রত্যেকটি সীট নিয়ন্ত্রণ করতো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কে হলে থাকবে কে থাকবে না সেটি তারাই সিদ্ধান্ত দিতো।

 

ছিলো না মত প্রকাশের কোন স্বাধীনতা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাদের গোপনীয় সবকিছু তল্লাশি চালানো হতো। ফেসবুকে কিংবা স্যোশাল মিডিয়ায় কিছু লেখার কারণে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে। বুয়েটের আবরার ফাহাদকে শুধুমাত্র ফেসবুকে লেখার কারণেই নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। 

এক্ষেত্রে হল প্রশাসন ছিলো একেবারেই নীরব। অথচ হলের প্রভোস্ট থেকে শুরু করে হাউজ টিউটর হল পরিচালনার জন্য ভাতা, আবাসন এমনকি পদোন্নতির ক্ষেত্রে তাদের হল পরিচালনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতো। বাস্তবিক অর্থেই তারা হলের কোন পরিচালনার দায়িত্বেই ছিলেন না। হলের প্রভোস্ট সার্টিফিকেট এবং সামান্য কিছু কাগজে সই করেই তার দায়িত্ব পালন করতেন। এমনকি ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার কোন শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম সহযোগিতাও করতেন না হলের এ দায়িত্বশীলরা। 

গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগের মতো অন্য কোন ছাত্র সংগঠন হল নিয়ন্ত্রণ করবে না এমন বিশ্বাসও ছিলো। এবং অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তারা সরব। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা নেতা হবেন তারা প্রকৃত অর্থে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কন্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে কাজ করবেন। এক্ষেত্রে বিগত দিনে হলে যে সব খারাপ সংস্কৃতি ছিলো সেগুলো বিদায় হবে। একই সঙ্গে হলের সীট সংকট নিরসন, লাইব্রেরীতে বইয়ের পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ও সীট বাড়ানোসহ শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করবেন। 

এমনি পরিস্থিতিতে এবারের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে আলোচনার শীর্ষে অবস্থান করছেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী এবং ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কাইয়ুম, ছাত্রদলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, স্বতন্ত্র ঐক্যজোট প্যানেলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবদুল কাদের এবং স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামিম হোসেন। 

ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাদিক কাইয়ুম এখন পর্যন্ত ভিপি সবার থেকে এগিয়ে রয়েছেন। শিবিরের ব্যাক্তিগত ভোট ব্যাংক, জুলাই আন্দোলনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং গত এক বছর ধরে শিক্ষার্থীবান্ধন নানান কর্মকান্ডের কারণে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। 

অন্যদিকে আবিদুল ইসলাম খান চমৎকার কথা বলেন, জুলাই আন্দোলনে তার ভূমিকা, ছাত্রদলের নিজস্ব ভোট ব্যাংক এবং শিবির বিরোধী কিছু ভোট তার বাক্সে পড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে উমামা ফাতেমার জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা, মেয়েদের হলে তার জনপ্রিয়তা এবং ছাত্রদল এবং শিবিরবিরোধী ভোট নিয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবেন বলে জানা গেছে। 

আবদুল কাদের প্রথম দিকে ভালো অবস্থানে ছিলেন এবং জুলাই আন্দোলনে তার ভূমিকাও ভালো ছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ড তাকে একটু বিপদে ফেলেছে। বাকী দিনগুলোতে প্রচারণা চালিয়ে দূর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে কাদেরও ভালো ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

শামিম হোসেন শিক্ষার্থীবান্ধব বক্তব্য দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এখনো সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন তিনি। তবে ফিক্সড ভোট ব্যাংক না থাকায় একটু বেশিই পরিশ্রম করতে হচ্ছে। 

সবকিছু মিলিয়ে ভিপি পদে যে প্রার্থীই জয়লাভ করুক না কেন ভোটের ব্যাবধান খুবই কম হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। 

জিএস পদে আলোচনায় রয়েছেন, ছাত্রদলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম, শিবিরের ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি এস এম ফরহাদ, এনসিপির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জিএস পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদার, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়ায় বক্তব্যের কারণে ভাইরাল হওয়া মো: আশিকুর রহমান। 

শেখ তানভীর বারী হামিম গত এক বছর ধরে হেলথ ক্যাম্প, খেলাধুলা এবং নানান রকম শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মকাণ্ডের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছেন। নির্বাচনে যেই জয়লাভ করুক তার সঙ্গেই প্রতিযোগিতা হবে। 

অন্যদিকে এস এম ফরহাদের শিবিরের নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংকের কারণে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। সাম্প্রতিক আদালতের রায়েও ফরহাদের ভোট সামান্য বেড়েছে। তবে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তাকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ফরহাদের অবস্থান আগের চেয়ে ভালো। 

আবু বাকের মজুমদাদের জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে বাকের একচেটিয়া ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মাহিন সরকার গতকাল শুক্রবার নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে বাকেরকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে বাকের জয়লাভ করার মতো অবস্থানে রয়েছেন। 

আল সাদী ভূঁইয়া ছাত্রদল, শিবিরকে যারা পছন্দ করেন না তাদের ভোট পেয়ে জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদী। আশিকুর রহমান তার ব্যতিক্রমী নির্বাচনী প্রচারণায় কিছু শিক্ষার্থীর নজরে এসেছেন। জয়লাভ করার মতো ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। 

এজিএস পদে আলোচনায় রয়েছেন শিবির সমর্থিত প্যানেলে মহিউদ্দিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী এবং মহিউদ্দিন রনি। 

এজিএস পদেও লড়াই হবে কঠিন এবং হাড্ডাহাড্ডি। কে নির্বাচিত হবেন তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। 

এজিএস পদে মহিউদ্দিন খানের জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা, শিক্ষার্থীবান্ধন কার্যক্রম এবং ভদ্র হিসেবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তানভীর আল হাদী মায়েদ ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। তবে সাম্প্রতিক কিছু বিতর্কিত কথায় কিছুটা জনপ্রিয়তা হারালেও জয়লাভ করার মতো ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী ডিবেটিং সোসাাইটির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ভালো এবং মহিউদ্দিন রনিও ক্যাম্পাসে আলোচনায় রয়েছেন। 

এছাড়া ভিপি, জিএস এবং এজিএসের বাইরে ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনায় রয়েছেন, ডাকসুর প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী জুলাই আন্দোলনে আহত সানজিদা আহমেদ তন্বী, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতিমা তাসনীম জুমা এবং সদস্য প্রার্থী সর্ব মিত্র চাকমা, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক মিতু আক্তার। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহদী হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছেন প্রতিদিন। তবে নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট হবে ফ্যাক্টর। ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ছাত্র রাজনীতি পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিই প্রাধান্য পাবে এ নির্বাচনে। 

”তবে নিশ্চিতভাবে কে জয়লাভ করবে সেটি বলা মুশকিল। নির্বাচনে জনপ্রিয় প্রার্থীরা কাছাকাছি ভোট পাবেন এবং খুব অল্প ভোটে জয় পরাজয় নিশ্চিত হবে বলে আমরা ধারণা করছি।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহারে আমরা লক্ষ্য করেছি লিডিং রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর ইশতেহার প্রায় একই, যা আমাদের কে এটা বুঝাতে সক্ষম হয়নি যে কেন একটি দল অন্য একটি দল থেকে বৃহৎ পরিসরে আলাদা এবং তারা ভোট পাওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা রাখে।

আমি মনে করি প্রত্যেকের ইশতেহার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র হওয়া উচিৎ, যেটা শিক্ষার্থীদেরকে ভোটপ্রদানে উৎসাহিত করবে । তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা অনেক যাচাই বাচাই করে একজন প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবে। আবিদ ভাই, সাদেক ভাই, কাদের ভাই, উমামা ফাতেমা আপুসহ আরও যারা আছেন তারা তাদের দলের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার অর্থে শিক্ষার্থীবান্ধব প্রাসঙ্গিক বাস্তবায়নযোগ্য ইশতেহার প্রদান করলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট প্রদানে অধিক উৎসাহিত হতো। 

সাব্বির মনে করেন, দল বা প্যানেল নয় শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের ব্যাক্তিকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। 

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাজিম সীমান্ত বলেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতিমধ্যেই এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ভোটার হিসেবে নিঃসন্দেহে এটি আনন্দের একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। প্রচারণা বিবেচনায় অনেকেই আবিদুল ইসলাম ও সাদিক কায়েমকে এগিয়ে রাখছেন। নারী শিক্ষার্থীদের উমামা ফাতেমাকে নিয়ে রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। আবার, গণঅভ্যুত্থানের ৯ দফা আন্দোলনের প্রসঙ্গকে সামনে রেখে কেউ কেউ আব্দুল কাদেরকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। 

তিনি মনে করেন, ভিপি পদে শেষ পর্যন্ত যেই নির্বাচিত হোন না কেন, সরাসরি শিক্ষার্থীদের ব্যালটে জয়ী হওয়ার কারণে এবারের ডাকসুতে আদর্শিক কার্যক্রমের পাশাপাশি লেজুড়বৃত্তির প্রবণতা কম থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। 

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ডাকসুতে ৪৭১ প্রার্থীর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ১১ জন, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বিতা করবেন। এ ছাড়া ১৩টি সদস্য পদে ২১৭ জন প্রার্থী হয়েছেন।

দীর্ঘ বারো বছর পড়াশুনা করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতিটি শিক্ষার্থীর লক্ষ্য থাকে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে নিজেদেরকে বিশ্বমানের মানুষ হিসেবে তৈরি করার। এজন্য শিক্ষার্থীরা বুয়েট, মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে। 

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠন (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮ টি পদের জন্য ৫৮৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল সংসদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে মোট মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১ হাজার ২২৬ জন।