Image description
 

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই ভূ-খন্ডে জিয়াউর রহমান আবির্ভূত হয়েছিলেন এক নাক্ষত্রিক বিভায় উদ্ভাসিত হয়ে। প্রতিটি ক্রান্তিকাল, দুঃসহ-দুর্বিপাকের অনিশ্চয়তা যখন ঘনিয়ে এসেছিলো, অসীম সাহসিকতায় হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে জাতির সম্মুখে ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। একাত্তর কিংবা পঁচাত্তর-মানুষের অনিঃশেষ নির্ভরতা, আস্থা আর ভরসার বিমূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন জিয়া।

 

একাত্তরে রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন, অপ্রস্তুত, অসংগঠিত দিকভ্রান্ত-দিশাহীন শঙ্কিত জাতি যখন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ভেসে আসা বজ্রকণ্ঠ 'আই মেজর জিয়া ডু হিয়্যার বাই ডিক্লেয়ার্ড দ্য ইন্ডিপেনডেন্স অব বাংলাদেশ। তার 'উই রিভল্ট' নিনাদ পৌঁছে যায় কোটি মানুষের হৃদয়ে।

বলছিলাম, শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের কথা। যার হাত ধরেই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ মাথা উচু করে ঘুরে দাঁড়ায় সারাবিশ্বে।

 

বাংলাদেশ বিনির্মাণে জিয়ার অবদান বলে শেষ করার মতো নয়। কৃষি খাতে বিপ্লব, মানবসম্পদ রপ্তানির সূচনা, কলকারখানা বেসরকারীকরণ, তৈরি পোশাক শিল্পের প্রতিষ্ঠা, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণে রাখবে এ দেশের মানুষ। বহুদলীয় গণতন্ত্রও ফিরিয়ে দেন জিয়া।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল খাদ্য সংকট। কিন্তু মেজর জিয়ার তীক্ষ্ণ গবেষণায় দেশকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করে এই কৃষি খাত। ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে প্রায় দুই হাজার আটশো মাইল খাল খনন করা হয়। লক্ষ্য ছিল—ধান উৎপাদন দ্বিগুণ করা, তিন ফসলী জমির পরিমাণ বাড়ানো এবং সেচের জন্য পানি সরবরাহ সহজলভ্য করা। তাঁর এসব উদ্যোগেই দেশ খাদ্য সংকট কাটিয়ে ওঠে।

 

জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে কুয়েত সফরের মাধ্যেমে দেশের মানবসম্পদ রপ্তানি শুরু করেন। সে বছর ছয় হাজার ৮৭ জন বাংলাদেশী কুয়েত যান। শুরু হয় বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবসম্পদ রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি জিয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তৈরি পোশাক, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করেছিলেন। জিয়ার হাত ধরেই গড়ে ওঠা সেদিনের শিশু গার্মেন্ট শিল্প আজ দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত।

 

দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। বিপুল সংখ্যক এই নারীকে কর্মহীন রেখে কোনভাবেই যে সদ্য স্বাধীন জনবহুল একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় সেটি উপলব্ধি করে জিয়াউর রহমান নারীদের দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের চাকা গতিশীল করেন। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয়।

শিক্ষা ক্ষেত্রেও জিয়ার ছিলো অনবদ্য অবদান। তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বা বিএনসিসি গঠনের মাধ্যমে দেশ গঠন ও নিরাপত্তায় শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দেন- যা আজ দেশের নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখছে।