Image description

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, যেনতেন নির্বাচনের মধ্যমে দেশকে আর তাঁবেদার রাষ্ট্র বানাতে দেব না। এখনো মৌলিক সংস্কার ও বিচার এবং লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। এ সময়ে কিসের নির্বাচন করবেন? যারা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মরেছে তাদের মায়েদের কী জবাব দেবেন?

বুধবার (২০ আগস্ট) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফেনী জেলা শাখার আয়োজনে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

চরমোনাই পীর বলেন, আমরা ছেলেহারা মায়েদের আর কান্না দেখতে চাই না। অবিলম্বে তাদের বিচার দেখতে চাই। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা সংস্কার ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিচার ছাড়া এখন নির্বাচন দিয়ে সরে গেলে জাতির কাছে কী জবাব দেবেন? অতীতে বহু মা সন্তানহারা হয়েছে। দেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আয়না ঘরের মতো টর্চার সেল তৈরি করে দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দেশবিরোধী বহু চুক্তি করা হয়েছে। আমরা সেই অবস্থায় আর ফিরে যেতে চাই না।

 

চরমোনাই পীর আরও বলেন, আমরা রাস্তায় নেমেছি দেশ গড়ার জন্য। আমাদের গুলির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা মানবতার জন্য কাজ করে। সরকারি সুবিধা ভোগ ও এমপি হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। যারা আমাদের গালি দিচ্ছেন তাদের বলব আমরা যে কথাগুলো বলছি তা আমাদের নিজের স্বার্থে বলছি না। আমরা চাই আমাদের দেশটি স্বপ্নের দেশে পরিণত হোক। যারা দেশের জন্য রাজনীতি করেন তাদের আহ্বান জানাব দেশকে গড়ুন, মানবতার কল্যাণে কাজ করুন। এখন দেশ গড়ার সুর্বণ সুযোগ এসেছে। এখন দেশ গড়তে না পারলে আগামী প্রজন্ম আপনাদের ঘৃণা করবে। যখন তারা ইতিহাস পড়বে তখন প্রকৃত সত্য জেনে যাবে, কী জবাব দেবেন তাদের।

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ইসলামপন্থিরা যাতে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে। দেশের সব ইসলামপন্থি দল এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা সবাই দেশের স্বার্থে কাজ করছে। এটি অনেকের সহ্য হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলন কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না, গঠিত হবে জবাবদিহিতামূলক সরকার। এতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটবে। এতে হাসিনার মতো কেউ স্বৈরাচারী হতে পারবে না। ফলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

ফেনীর জনগণের দুর্ভোগ প্রসঙ্গে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, নদী ভাঙন, বন্যা ও পরিবেশগত অস্থিরতায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। টেকসই ও বিজ্ঞানভিত্তিক বাঁধ নির্মাণ, পানি নিষ্কাশন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছ। এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান চরমোনাই পীর।

অনুষ্ঠানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফেনী জেলা শাখার সভাপতি গাজী এনামুল হক ভূঞার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি একরামুল হক ভূঞা সঞ্চালনা করেন।

এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল করীম আকরাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, আলহাজ জান্নাতুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ মাওলানা একরামুল হক ভুইঁয়া।

এ ছাড়া ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ সাইফ উদ্দিন শিপন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মুফতি আবদুল হান্নান, খেলাফত মজলিসের নোয়াখালী জোন প্রধান মাওলানা মোহাম্মদ আলী মিল্লাত ও হেফাজতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।