
নাটোরের লালপুর উপজেলার এক নিভৃত গ্রাম থেকে উঠে আসা মিনহাজুল হক নয়ন এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির পরিচিত মুখ। অন্ধকার ভেদ করে আলোতে ওঠা এই তরুণ জীবনের প্রতিটি ধাপে সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে নিজের নেতৃত্বগুণ গড়ে তুলেছেন।
নয়ন বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও তিনি মুহসিন হল ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের মনোনীত সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
নয়ন দীর্ঘ ১০ বছরের ছাত্ররাজনীতির পথচলায় তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে নানা বাধা-বিপত্তি। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে দুইটি মামলা, সহ্য করতে হয়েছে পুলিশের অকথ্য নির্যাতন, ৪ দিনের রিমান্ড ও ৩ মাস ৭ দিনের কারাবাস। একাধিকবার ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলার শিকারও হয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নয়ন রাজনীতির মাঠে সরাসরি যুক্ত হন। এরপর ২০১৭-১৮ সালে খালেদা জিয়ার নিয়মিত হাজিরায় একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০১৮ সালের ‘নিশিরাতের নির্বাচন’ ও ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের সময়ও তিনি ছিলেন রাজপথের একজন অগ্রগামী মুখ।
২০২০-২১ সালের রাকিব-আমান কমিটির সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, মধুর ক্যান্টিন বা কেন্দ্রীয় পার্টি অফিস নয়ন ছিলেন প্রতিদিনের উপস্থিত মুখ। ২০২২-২৩ সালের সোহেল-আরিফ কমিটির সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ছাত্রলীগের হুমকি থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ছাত্রদলের প্রতিটি মিছিলে তার নাম থাকত এবং অদম্য উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
২০২৪ সালের ‘ডামি নির্বাচন’ ও পরবর্তী হরতাল-অবরোধ সফল করতে নয়ন রাজপথে ছিলেন সর্বপ্রথম সারিতে। সাহস-শিপন কমিটির নেতৃত্বে, সাহস ও শিপন ভাইয়ের পরামর্শে তিনি কারফিউ ভেঙে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা culminated হয়েছে ৫ আগস্টের বিজয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন নয়ন, তবে এমফিলের সুযোগ হারানো তার জন্য এক মানসিক বেদনা। এবার ডাকসু নির্বাচনে ভোটার না হলেও তিনি ছাত্রদলের মনোনীত প্যানেল ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন সংগঠন এবং আদর্শিক রাজনীতিকে সামনে রেখে।