
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে, প্রচলিত ব্যবস্থায় নাকি আনুপাতিক হারে (পিআর) হবে—এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও দানা বাঁধছে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ইস্যুতে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দ্বিধাবিভক্ত। এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি নিয়ে বড় সংকট দেখছেন রাজনীতিবিদ ও পর্যবেক্ষকরা। সেইসঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েও এক ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। যেসব দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে, তারা নিজেদের পাল্লা ভারী ও জনমত তৈরি করতে তৎপরতা বাড়িয়েছে। অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক যোগাযোগের পাশাপাশি আন্দোলনের কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছে। গত রোববার বিশেষ সেমিনার করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেখানে পিআর পদ্ধতির পক্ষে থাকা অন্তত ১০টি দলের শীর্ষ নেতা ও বিশিষ্টজন অংশ নেন। এর আগে গত বুধবার ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলটি। জামায়াত সূত্র জানায়, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ ডেকেছে চরমোনাই পীরের রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এর আগে ২৮ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ এবং গত ১২ জুলাই জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতির বিষয়ে একটি বিশেষ সেমিনার করেছে দলটি। আজকের সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি আসতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে। দলটি মনে করে, এর পেছনে রয়েছে ষড়যন্ত্র এবং নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত। তবে জামায়াতে ইসলামী বলছে, মানসম্পন্ন নির্বাচনের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে পিআর পদ্ধতি। বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ফলে পিআর পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর পক্ষ-বিপক্ষের বক্তব্যে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হচ্ছে। অবশ্য এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা নির্বাচন কমিশনও কোনো অবস্থান স্পষ্ট করেনি।
জানা যায়, দেশে নিবন্ধিত ৫৫টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভিন্ন কারণে ৪টি দলের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে। স্থগিত রয়েছে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন। ৫০টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ১৮টি দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে এবং বিপক্ষে ২৮টি রাজনৈতিক দল। ৪টি দল তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। অবশ্য কিছু দল আংশিকভাবে পক্ষে। অন্যদিকে নিবন্ধনের বাইরে থাকা বেশকিছু দলও পিআর পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিপক্ষে থাকা দলগুলো মূলত বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী। তবে এনসিপি পিআর পদ্ধতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। মূল ধারার ইসলামী দলের মধ্যে ৫টি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে ও ২টি দল বিপক্ষে এবং ২টি দল অবস্থান স্পষ্ট করেনি। অন্যদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ মুহূর্তে দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে জটিলতা আরও বাড়বে। এ বিষয়ে আরও সময় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
এদিকে গত শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়া’ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে সনদে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্যের কথা উল্লেখ করা হলেও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতির সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। তাছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনে সিপিবি বাদে ৩২টি দল ও জোট একমত পোষণ করেছে। অবশ্য আইনসভার নিম্নকক্ষের নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের ১০০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিএনপি ও এনডিএম এ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে।
রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই গত ১২ আগস্ট পিআরসহ কয়েকটি ইস্যুতে পরিচালিত একটি জরিপের ফল প্রকাশ হয়েছে। যেখানে উচ্চকক্ষ গঠনে পিআর পদ্ধতিতে আসন বণ্টনের পক্ষে ৭১ শতাংশ মানুষ তাদের মতামত দিয়েছেন। জরিপটি পরিচালনা করেছে নাগরিক সংগঠন সুশাসনে জন্য নাগরিক (সুজন)। জরিপের তথ্যানুযায়ী, ত্রিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা—জাতীয় সংসদ ও সিনেট গঠনের পক্ষে মত দেন ৬৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। ৬৩ শতাংশ মানুষ ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট নারী আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন। বিরোধী দল থেকে নিম্নকক্ষে একজন ডেপুটি স্পিকার নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৬ শতাংশ মানুষ। উচ্চকক্ষে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার চান ৮২ শতাংশ মানুষ। মোদ্দাকথা দেশের আগামী সংসদ নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক মতভেদ এখনো স্পষ্ট।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছেন। তার নির্দেশনা মতে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনও জানিয়েছে চলতি সপ্তাহে নির্বাচন কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।
পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। এমন কোনো শক্তি নেই যে, নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন, সেই অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে থাকা দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, তারা যে কোনো মূল্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চান। তা না হলে দেশে আবারও একদলীয় ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। এক্ষেত্রে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রধান রক্ষাকবচ হলো নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন।
গত রোববার রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার করেছে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে ‘জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা ছাড়াও সেমিনারে খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এলডিপি, জাগপা, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, এনডিপি, জনতার অধিকার পার্টি, বাংলাদেশ জনজোটের নেতাসহ বিশিষ্টজনরা অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে জামায়াতসহ সব দলের নেতারা মূলত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানান।
পিআর প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের গতকাল কালবেলাকে বলেন, আর যেন ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় আসতে না পারে সে কারণেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া দরকার। আইনসভার দুকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। কেননা, দেশের শতকরা ৭১ ভাগ লোক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। দেশের জনগণ জুলাই ঘোষণা ও সনদের আইনি ভিত্তি চায় এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও গোলটেবিল বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে—জনগণ কী চায়। জনগণের দাবি আদায়ে তিনি সব ইসলামপন্থি ও গণতান্ত্রিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানান।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের অধিকাংশ দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। এ পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।
অন্যদিকে গত ১২ জুলাই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি’ বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। ওই বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শিশির মনির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ জনতা পার্টি বাংলাদেশ, এনসিপি, অধিকার পরিষদ, নেজামে ইসলাম পার্টি, ফেডারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও নাগরিক কোয়ালিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ওই গোলটেবিল বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) পিআরকে মাদার অব অল রিফর্ম আখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় জুলাইয়ের চেতনা, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন রক্ষায় পিআরই হলো একমাত্র সমাধান। পিআর হলো ‘মাদার অব অল রিফর্ম। তিনি বলেন, পিআরের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে, সংসদ জাতীয় ইস্যুতে বেশি মনোযোগী হবে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে এবং রাজনৈতিক জোট-সমঝোতা হবে আদর্শভিত্তিক ও বস্তুনিষ্ঠ। সুতরাং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করার কোনো বিকল্প নেই।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আশরাফ আলী আকন কালবেলাকে বলেন, বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়। এই সরকার একটি দলের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। গত ৫৪ বছরেও ভোট ডাকাতি বন্ধ হয়নি, ভোট ডাকাতি ও সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। পিআর পদ্ধতি না হলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে সরকার আমাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে।
এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেন বলেন, পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন দিতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি ৯১ সালে ক্ষমতায় গিয়ে তিন জোটের রূপরেখা বাস্তবায়ন করেনি। ৯৬ সালেও একতরফা নির্বাচন করেছিল। প্রধান উপদেষ্টা যে জুলাই ঘোষণা পেশ করেছেন তা আশাব্যঞ্জক নয়। জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে বর্তমান সংবিধান পরিবর্তন এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। দেশের টেকসই গণতন্ত্র এবং বৃহত্তর স্বার্থে আলোচনার টেবিলেই রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের কৌশল খুঁজতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক গতকাল কালবেলাকে বলেন, পিআর নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ নির্বাচনের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘনিয়ে আসায় এই ইস্যুতে দীর্ঘস্থায়ী টানাপোড়েন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সংলাপের মাধ্যমে একটি সর্বসম্মত সমাধান বের করা, যেন নির্বাচনের সময় পরিবর্তন করতে না হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে বোঝাতে হবে যে, পিআর ইস্যুতে জটিলতা তৈরি হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হবে, যা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামী রাজনীতির জন্যও ক্ষতিকর। সরকার দ্রুত সব দলের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজবেন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে যাতে আলোচনায় আস্থা তৈরি হয়। আস্থা ও সমঝোতার ভিত্তিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। অন্যথায় নির্বাচনের অনিশ্চয়তা কেবল রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াবে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ কালবেলাকে বলেন, ‘কিছু দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে; কিন্তু দেশের বেশিরভাগ মানুষ পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বোঝেন না। তারা এ পদ্ধতিতে কখনো ভোট দেননি, যারা পিআর নির্বাচনের কথা বলে, তাদের ভোট নেই। নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। কিছু দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলেও বেশকিছু দেশে এখনো পরীক্ষামূলক রয়েছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় পিআর অবাস্তব বিষয়।’