
সময়টা ২০ জুলাই ভোর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জহুরপুর বিওপির সীমান্ত পিলার ১৬/৫-এর কাছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক হন মোহাম্মদ লালচান (২৫)। পরে তাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার ওই মরদেহ নাচোল উপজেলার নেজামপুরে নিজ গ্রামের বাড়িতে সন্ধ্যায় দাফন করেন স্বজনরা।
১ আগস্ট বিকেলে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলতলা ঘাট এলাকায় পদ্মায় ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায় সৈয়বুর নামের একজনের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ। সবগুলো মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
‘জন্ম থেকেই দেখে এসেছি সীমান্ত এলাকার মানুষের ওপর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী অমানবিক নির্যাতন। কাঁটাতারের কাছাকাছি কাউকে পেলেই গুলি করে মারেন তারা। এই এলাকার শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বিএসএফের গুলিতে। কিন্তু সম্প্রতি তাদের হত্যাকাণ্ডের কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর কাউকে গুলি করে মারেন না তারা। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশিদের মরদেহ।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ মাসের শাসনামলে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। তবে সম্প্রতি নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের কৌশল পরিবর্তন করেছেন তারা।
স্থানীয় ও নিহতদের পরিবারের ভাষ্য, এখন গুলি করে নয় বরং বৈদ্যুতিক শক কিংবা অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশিদের মরদেহ।
শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের শাহাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জন্ম থেকেই দেখে এসেছি সীমান্ত এলাকার মানুষের ওপর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী অমানবিক নির্যাতন। কাঁটাতারের কাছাকাছি কাউকে পেলেই গুলি করে মারেন তারা। এই এলাকার শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বিএসএফের গুলিতে। কিন্তু সম্প্রতি তাদের হত্যাকাণ্ডের কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর কাউকে গুলি করে মারেন না তারা। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশিদের মরদেহ।’
‘সম্প্রতি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে বিএসএফ। তবে এখন আর কাউকে গুলি করে মারা হচ্ছে না। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে মারা হচ্ছে।’
রাকিবুলের ভাষ্য, ‘এখন আর গুলি করে মারছে না বিএসএফ। তারা হত্যাকাণ্ডে কৌশল পরিবর্তন করেছেন। অপরাধ ঢাকতে নির্যাতন করে মৃত্যু নিশ্চিতের পর মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
আতাউর রহমান নামের আরেকজন স্থানীয় জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে আঁতাত করে সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি গরু চোরাকারবারি চক্র। তাদের টার্গেট এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষ। ২০-৩০ হাজার টাকার প্রলোভনে পদ্মা নদী সাঁতরে ভারতে গরু আনতে পাঠানো হয় তাদের। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় চোরাকারবারি ও ভারতীয় নাগরিকেরা।’
- সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সমির উদ্দিন বলেন, ‘সম্প্রতি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে বিএসএফ। তবে এখন আর কাউকে গুলি করে মারা হচ্ছে না। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে মারা হচ্ছে।’