Image description
জুলাই আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ

কারখানা শ্রমিক সাব্বির হোসেন মুন্না। পরিবারের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাবা-মা কাজ করেন গার্মেন্টে। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকায় লংমার্চে গিয়ে ফেরেননি মুন্না। তিনি জীবিত আছেন না কি শহীদ হয়েছেন জানেন না স্বজনরা। ছেলে ফিরবে এ বিশ্বাস বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন বাবা-মা। গণ অভ্যুত্থানের এক বছরেও কান্না থামছে না তাদের। একমাত্র ছোট বোন সুমাইয়ার এ বছর দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ভাই নিখোঁজের পর বন্ধ হয়ে গেছে তার পড়াশোনা। ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবার।

দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় মুন্না। বাবা-মায়ের স্বল্প বেতনে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। তখন পড়াশোনার ইতি টেনে পরিবারের হাল ধরতে স্থানীয় কারখানায় চাকরি নেন তিনি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মুন্নার বাবা-মা ও বোন।

মা মুক্তা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সেদিন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কাঁচপুর থেকে মিছিলের সঙ্গে গণভবনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল মুন্না। এরপর আর বাড়ি আসেনি। প্রতিবেশীদের নিয়ে কত জায়গায় গিয়েছি। রাজধানীর প্রায় সব হাসপাতাল, মর্গ ও থানায় খুঁজেছি। ১৮ আগস্ট সোনারগাঁ থানায় করেছেন জিডি। আড়াইহাজার সেনাক্যাম্পেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থী, বন্ধু-বান্ধবসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিখোঁজের সন্ধান চেয়ে ছবি ও প্রয়োজনীয় নথি দিলেও আজও কেউ ছেলের হদিস দিতে পারেনি। এখন চরম হতাশা আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে। আমার ছেলে আমি ফিরে পেতে চাই।

বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলের ছবি নিয়ে কত জায়গায় খুঁজলাম কোথাও পেলাম না। কেউ আমার মুন্নার সন্ধান দিতে পারেনি। যদি জানতাম ছেলে শহীদ হয়েছেন তবুও নিজেকে বুজাইতাম, দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। এখন কোনো আশায় বাঁচব? নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জেলায় যারা শহীদ এবং আহত হয়েছেন তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। ৫ আগস্ট থেকে সাব্বির হোসেন মুন্না নামে কেউ নিখোঁজ আছে আমাদের জানা ছিল না। কেউ নিখোঁজ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। তিনি কীভাবে মিসিং হলেন, কোথায় আছে অবশ্যই তদন্ত করা হবে।