
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন তিন মাসের মধ্যেও সম্পন্ন হতে দেখেছি; কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর সময় লাগানোর কোনো কারণ দেখছি না। এই বিলম্ব কোনো শুভলক্ষণ নয়। দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করুন। আর না হয় বিএনপি বসে থাকবে না।
তিনি বলেন, বিগত ৯ মাসে দেশের মধ্যে কিছু হলেই সব দোষ বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘাড়ে ছাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি গুম, খুন, মামলা হামালা নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। তার বড় উদাহরণ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তিনি পায়ে হেঁটে সুস্থ অবস্থায় জেলে গেলেন, যখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান, তখন ট্রেচারে করে যেতে হয়, বিনা অপরাধে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বছর পর বছর। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী মামলার শিকার হয়েছেন- ভুলে গেলে হবে না।
গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এসব গুলো বলেন।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, আপনারা ২০০৮ সালে সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেননি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তো আগেই রাতে ভোট হয়ে গেছে। এবার সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকেই করতে হবে।
এ সময় তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনও নাকি ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। ২০১৪ ছিল ভোটারবিহীন। ২০১৮ ছিল নৈশ ভোটের নির্বাচন। আর ২০২৪ হয়েছে আমি আর ডামির নির্বাচন। জনগণ আসল নির্বাচন চায়। যেখানে জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সকালে উপজেলার বাংলাবাজার জাঙ্গালিয়া মাঠে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।
নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরফরাজ আহমদ চৌধুরী সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গৌছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতা সিদ্দিকী, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক আহমদ আলী মুকিম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া ও আমেরিকা শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল হক নান্টু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাখাওয়াত হাসান জীবন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, হাজী এনামুল হক, নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীসহ অনেকেই।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাঁঠাল রানী ষড়যন্ত্র করছেন, ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার রাখার সব চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এখন সেখানে বসে স্বৈরচারের দোসররা চেষ্টা করছে, সেটা রুখে দিতে হবে।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রশাসনের মধ্যে এখনও স্বৈরাচার সরকারের দোসর ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে। আপনারা দয়া করে খোলস থেকে বেরিয়ে আসুন এবং জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে জনগণের জন্য কাজ করুন। নাহলে কেউ আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, অনেকেই জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন, বড় বড় কথা বলছেন, অথচ জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন বা আহত হয়েছেন তাদের বেশির ভাগ বিএনপির নেতাকর্মী। আমাদের ছোট করবেন না। কাট করতে যাবেন না। আমরাই আন্দোলনের আসল মাস্টার মাউন্ড।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে প্রতিরোধ বা থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল।
অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ৭৫-এ সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্যে মেজর জিয়া এ দেশকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। জিয়াউর রহমান জন্মের পর থেকেই নিজেকে তৈরি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তার কালজয়ী দর্শনের সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবাদী দল। তার সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান স্বাধীনতার ঘোষণা।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিকে প্রতিরোধ বা ষড়যন্ত্র করে থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ করেছে।