Image description

ভোলার চরফ্যাশনে এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের পর গ্রামবাসীর হাতে আটক হওয়া অভিযুক্ত ধর্ষককে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার একটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম ঢালী এবং ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জে.বি আব্বাসসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন ও সাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা এবং ভুক্তভোগী পরিবার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে স্থানীয় কেরামতগঞ্জ বাজারের দধি ব্যবসায়ী দুলাল মোল্লা এক অসহায় জেলের স্ত্রী প্রতিবন্ধী গৃহবধুর ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের শিকার গৃহবধুর ডাকচিৎকারে স্থানীয় বাসিন্ধারা ছুটে এসে ব্যবাসয়ী দুলাল মোল্লাকে ওই নারীর ঘর থেকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। ব্যবসায়ীকে নারীর ঘরে আটকের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পরলে চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের  কৃষকদলের সাধারন সম্পাদক জসিম ঢালী ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্মসাধারন সম্পাদক জে.বি আব্বাস জনতার হাত থেকে ধর্ষককে ছিনিয়ে নেন। পরে ধর্ষণের শিকার নারী ও তার স্বামীকে মামলা না করার জন্য অব্যাহত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ওই পরিবার।

ভিক্টিম নারী জানান, তার স্বামী পেশায় একজন জেলে। তার স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী ফুফা ব্যবসায়ী দুলাল মোল্লা তাকে প্রায় সময় কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন তার স্বামী নদী থেকে ফিরে বাজার করার জন্য স্থানীয় কেরামতগঞ্জ বাজারে অবস্থান নেন। এসুযোগে তার প্রতিবেশী ফুফা দুলাল মোল্লা তার বাড়িতে যান। এবং তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। এবং তার স্বামীর কোথায় আছেন সে অবস্থান জানতে চান। তার স্বামী বাড়িতে নেই শুনে তিনি তাকে ঝাপটে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে তার স্বামীসহ স্থানীয়রা ধর্ষক দুলাল মোল্লাকে তার ঘর থেকে আটক করেন।

গৃহবধুর স্বামী জানান, তিনি নদী থেকে বাড়ি আসার পথে স্থানীয় কেরামতগঞ্জ বাজারে ঘরের জন্য বাজার করে বাড়ি ফেরন। বাড়ি ফিরে তিনি ঘর বন্ধ দেখে স্ত্রীকে ডাকেন। পরে ঘর ভিতর থেকে পুরুষের কথার শব্দ পেয়ে তিনি ঘরের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। ধর্ষক দুলাল মোল্লাকে ঘর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্ধারা এসে ব্যবসায়ীকে ওই নারীর ঘর থেকে আপত্তিরকর অবস্থায় আটক করেন। পরে কৃষকদলের সাধারন সম্পাদক জসিম ঢালী ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্মসাধারন সম্পাদক জে.বি আব্বাস ওই ধর্ষককে জনতার হাত থেকে ধর্ষককে ছিনিয়ে নেন। এর পরে তিনি ও তার স্ত্রী মামলা করতে গেলে ওই নেতাদের হুমকি ধামকিতে মামলা করতে পরেননি তিনি। এখন প্রভাবশালীদের অব্যহত হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দুলাল মোল্লা ও জসিম ঢালী আত্মগোপনে রয়েছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে দুলাল মোল্লা কল কেটে দেন। 

অন্যদিকে ছাত্রদল নেতা জে.বি আব্বাস দাবি করেন, ‘দুলাল মোল্লাকে স্থানীয়রা মারধর করছিল, তাই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, আমি কোনো ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত নই।’

এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’