
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ২৩তম দিনের আলোচনা শেষ হয়েছে। দু-একটি বাদে বেশিরভাগ বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো। তবে সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিমত তৈরি হয়েছে। বিশেষ আলোচিত তিনটি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্ট (এনসিপি) এ নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।
এর মধ্যে বিএনপি চায় কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে পরবর্তী সংসদে কার্যকর হবে। আর জামায়াত ও এনসিপি বলছে আইনি ভিত্তি না দিলে তারা চূড়ান্ত সনদে সই করবে না।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দিনভর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ নিয়ে নিজ নিজ দলের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন দলগুলোর নেতারা।
বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে দু-একটি বাদে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিছু ক্ষেত্রে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। আমরা মনে করি সব বিষয়ে সবাই একমত হবেন—এমনটি নাও হতে পারে। তবে যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, আমরা মনে করি এক্ষেত্রে কমিশনের প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত। কারণ আমরা এখানে যে একমত হয়েছি—তা আইনের ঊর্ধ্বে। আমরা মনে করি, জনগণের সার্বভৌমের ওপর কোনও আইনি ভিত্তি থাকতে পারে না। তারপরও এ বিষয়ে আলোচনা হলে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। আর সরকার চাইলে এটি নিয়ে গেজেট দিতে পারে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবি উল্লাহসহ যুগপতের শরিক নেতারা।
জামায়াত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে জামায়াত নেতারা
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, সনদের আইনি ভিত্তি অবশ্যই দিতে হবে। অন্যথায় এতো দিনের আলোচনা অর্থহীন। তবে আইনি ভিত্তি কীভাবে হতে পারে সেটা নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে। এ নিয়ে প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইন বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে। লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, গণভোট ও অধ্যাদেশ। যেভাবেই হোক আইনি রূপ এ সরকারকেই দিতে হবে। অন্যথায় আমরা সনদে সই করবো না। আগামী ৫ আগস্টের আগেই তা বাস্তবায়ন দেখতে চান।
তিনি বলেন, যারাই এর বিপক্ষে যাবে। বুঝে নিতে হবে, তারা নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটাতে চায়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ।
এনসিপি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে এনসিপি নেতারা
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে সই না করার কথা জানিয়েছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব দল মোটামুটি ঐকমত্যের জায়গায় আসলেও বাস্তবায়ন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেনি কমিশন। অথচ এখনই বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে শঙ্কার জায়গা তৈরি হতে পারে। বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছি। মনে হচ্ছে কমিশন কোনও একটি জায়গায় দুর্বল। আইনি কাঠামো না দিলে আমরা মানবো না। কিছুতেই জুলাই শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না।
এনসিপির অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন ও সদস্য আরমান।