Image description
‘জামায়েতের অপরাধ শুধু ৭১ এর অপকর্ম না, বর্তমানে সিস্টেমেটিক নৈতিক করাপশন’ কথাগুলো বলছিলেন সাংবাদিক আশরাফ কায়সার। সম্প্রতি একটি টকশোতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করতে দেখা গেছে এই সাংবাদিককে। তার মতে এই দলটির অর্থনৈতিক দুর্নীতির চেয়েও নৈতিক দুর্নীতি বেশি।


সাংবাদিক আশরাফ কায়সার উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সেই টকশোতে। এসময় তিনি জামায়াতকে দেশ পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক শক্তি আখ্যা দিয়ে আরো বলেন, ‘জামায়াত হচ্ছে সেই বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক শক্তি। যারা নারী স্বাধীনতা চান না। নারীদের হেনস্থার সময় মুখ খোলেন না। বাংলাদেশের প্রগতির পক্ষে যায় এমন কোন আন্দোলনে তারা ছিলেন না। ’


যারা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষপাতিত্ব করে এই সাংবাদিক তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি আপনাকে একটু প্রশ্ন করি কোনটি বড় অপরাধ? দুর্নীতি নাকি মানবতা বিরোধী অপরাধ? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে খুন করা অপরাধ, নারীদেরকে ধর্ষণ করা অপরাধ নাকি দুর্নীতি বড় অপরাধ?’


২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় জামায়াতের ভূমিকা থাকার পরও যে জনগণ তাদের সাদরে গ্রহণ করে নেবে না সেটি  উল্লেখ করে আশরাফ কায়সার বলেন, ‘তাদেরকে আমরা একটা খুশি খুশি ভাব দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে গণঅভ্যুত্থানটির সাথে যেহেতু তারা যুক্ত ছিলেন তাদের ছাত্র সংগঠন যুক্ত ছিল। কোথাও কোথাও তারা দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। ডাজেন্ট মিন বাংলাদেশের লোক স্বাধীনতা বিরোধীদেরকে রাজনীতির মঞ্চে মধ্য অবস্থানে দেখতে চায়।’


জামায়াত বর্তমান যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা না করলে জনগণ তাদের গ্রহণ নাও করতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মানুষ ভয়ঙ্করভাবে ভীত। যে এই গণঅভ্যুত্থান হলো। একটি অপশাসনের মহিলা পালিয়ে গেলেন দলবলসহ আরেকটি ভয়ঙ্কর অপশাসন, আমরা পুরনো শকুন ফিরে এসেছে এরকম অনেক জায়গায় দেখেছি কাজেই এই মীমাংসাটি জামাতকে করতে হবে জামাত ভাবছে যে এটির আলোচনা না করে বিএনপি বাবা বা সরকারে যারা যেতে পারে তাদের বিষদগার করলে তার একটা রাজনৈতিক ভোট তৈরি হবে কিন্তু এমনও হতে পারে যে আপনার দক্ষিণপন্থী অথবা আপনার ডানপন্থী ইসলামপন্থী আমরা যেই নামেই ডাকি না কেন তাদেরকে হয়তো গণতন্ত্রের শক্তি হিসেবে মানুষ গ্রহণ নাও করতে পারে।’


এরপর সাংবাদিক আশরাফ কায়সার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কথা এবং জামায়াতের নারী স্বাধীনতার বিরোধীতার কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘জামাতের অপরাধ ৭১ সাল না শুধু বর্তমান সময়ে সিস্টেমেটিক নৈতিক করাপশন। জামাত হচ্ছে সেই বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক শক্তি। যিনি নারী স্বাধীনতা চান না। নারীদের হেনস্থার সময় মুখ খোলেন না।’


বাংলাদেশের প্রবীণ এই সাংবাদিক জুল্ইা অভ্যুত্থানে জামায়াতের অংশগ্রহণের বিষয়টিকে তাদের সৌভাগ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রগতির পক্ষে যায় এমন কোন আন্দোলনে তারা ছিলেন না। তাদের সারাজীবনের সৌভাগ্য তাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মত একটি ঘটনার সাথে তারা কোন একভাবে যুক্ত হয়ে গেছিলেন।’


জামায়াতের মত দলকে জনতা ক্ষমতায় বসিয়ে বাংলাদেশকে অপমানিত করবে না উল্লেখ করে সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, ‘তাদের (জামায়াত) অপরাধের সীমা কিন্তু গুরুতর। তাদের যে আশফালন আমরা দেখতে পাচ্ছি এতে বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভীত। দেখুন জামাত কখনো রাষ্ট্র ক্ষমতায় যায়নি। রাষ্ট্র ক্ষমতা তো দূরের কথা। মানে সরকারের ক্ষমতা পাওয়া। একটি চেয়ার দেওয়ার পরেও আপনি একজন মানুষের মানে দুর্নীতি করার প্রবণতা লোভ এবং আশফালন টের পাবেন। জামাত ওই পরীক্ষায় কখনো অবতীর্ণ হয়নি। এবং আমার যতটুকু ধারণা বাংলাদেশের সচেতন মানুষ এই শক্তিকে ক্ষমতায় পাঠিয়ে বাংলাদেশকে অপমানিত করবে না।’