Image description

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটকেন্দ্র আবার ভোটারের পদধ্বনিতে মুখর হবে। এইটা চাই। তার জন্যই এত কিছু। তাহলে ভোট কেন পেছাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা উঠেছে কেন? এটা তো আজ গোটা জাতির প্রশ্ন। তাহলে নিশ্চয় ভেতরে ভেতরে অত্যন্ত গভীর ষড়যন্ত্র চলছে; এটা তো হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যরা বক্তব্য দেন।

রিজভী বলেন, আমরা বলেছি, সংস্কার চাই। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, একটা নির্দিষ্ট সময় বলে দিন, বেশি প্রলম্বিত করবেন না। লন্ডনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হলো; বৈঠক থেকে একটা যুক্ত বিবৃতি এলো। দেশের মানুষ একটু স্বস্তি পেয়েছে; কিন্তু এই স্বস্তি আমার মনে হয় কেউ কেউ চাচ্ছেন না। তার পরই সারা দেশে শুরু হলো সংঘাত রক্তাক্ত পরিস্থিতি! কেন—প্রশ্ন তোলেন তিনি।

রিজভী বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নিন্দা জানিয়েছে। এটার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আজীবন বহিষ্কার করেছি। ঘটনার পরপর চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিবৃতিসহ নিন্দা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, তারা যেখানেই থাকুক, যে অবস্থায় থাকুক।

রিজভী আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মাফিয়া গডফাদার আর কক্সবাজারের গডফাদারের জন্য শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে তাদের পক্ষে কথা বলতেন। আর দলের নামে কেউ যদি চাঁদাবাজি করেছে, কেউ যদি অন্যায় করেছে, তাহলে সাংগঠনিক শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে। শাস্তিস্বরূপ কেউ বহিষ্কার হচ্ছেন, কারও পদ স্থগিত হচ্ছে অথবা আমরা নিজেরাই পুলিশকে বলছি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে অথবা নিজেরাও মামলা দিচ্ছে—এটাই তো তারেক রহমান। আর মিটফোর্ডের ঘটনায় কেন তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে?

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছয়-সাত বছর ভয়ংকর নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না; সেই ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখল শেখ হাসিনা। গোটা জাতি যার প্রতি সহানুভূতিশীল, অথচ তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলছেন!

তিনি বলেন, তারেক রহমানকে ছাদের ওপর থেকে ফেলে দিল, কোমর ভেঙে ফেলা হয়। নিপীড়িত নির্যাতনের এক প্রতীক হচ্ছে তারেক রহমান। তার বিরুদ্ধে মিছিল ও ফেসবুকে সামাজিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে আজেবাজে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলা হচ্ছে; তাহলে খুলনায় বিএনপির একজন যুবককে গুলি করে তার পায়ের রগ কেটে দিল এবং কক্সবাজারে বিএনপিকর্মী আব্দুর রহিমকে হত্যা করল জামায়াত। সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে না কেন?

সবসময় যে কোনো হত্যাকাণ্ড ও রক্তপাত হলে সরকারকে অভিযোগ করে এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলার জন্য দায়দায়িত্ব সরকারের অথচ তাকে কিছু বললেন না, প্রশাসনকে কিছু বললেন না। মিছিল করছেন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে, যিনি ১৭-১৮ বছর লন্ডনে রয়েছেন। যিনি নিজেই শেখ হাসিনার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার।

ছয়-সাত বছরের নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয়কে নিশ্চিত করেছেন তারেক রহমান জানিয়ে রিজভী বলেন, সাহস আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে কৃষক দল।

কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় এতে বিএনপি ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

ঢাকাটাইমস