
সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সংসদীয় আসন দুটি। এর মধ্যে বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে পঞ্চগড়-২ আসনটিও নানান কারণে বেশ আলোচিত। ২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা আসনটি এবার পুনরোদ্ধার করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে বিএনপি। তবে শুরু থেকেই আসনটিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরিতে তৎপর জামায়াত।
এই আসনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী (হিন্দু) মানুষ বসবাস করে। বিশেষ করে বোদা উপজেলার পাঁচপীর এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নে সনাতন ধর্মাবলম্বী ভোটারের সংখ্যা বেশি। অতীতের বিভিন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে এসব ভোটারের বড় ভূমিকা দেখা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এই আসনে এবার হিন্দু ভোটার এক লাখের বেশি। এত বিপুল সংখ্যক ভোটারের সমর্থন পেতে বেশ তৎপর বিএনপি ও জামায়াত।
পঞ্চগড়-১ আসনের মতো এখানেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ছোটবড় নেতাদের এলাকায় দেখা যায় না। দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার আগে এবং পরে এলাকায় কোনো তৎপরতাও দেখা যায়নি। কর্মকাণ্ড নেই জাতীয় পার্টির।
বোদা উপজেলার পাঁচপীর এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নে সনাতন ধর্মাবলম্বী ভোটারের সংখ্যা বেশি। অতীতের বিভিন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে এসব ভোটারের বড় ভূমিকা দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ আসনে এবার হিন্দু ভোটার এক লাখের বেশি। তাই এত বিপুল সংখ্যক ভোটারের সমর্থন পেতে বেশ তৎপরতা দেখা গেছে আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এবং জামায়াতকে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ জাসদ, জাকের পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
পঞ্চগড়-২ আসনে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কামিজ উদ্দিন প্রধান নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে মোজাহার হোসেন এখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও পরে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০০৮ সালে এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম সুজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পঞ্চগড়-১ আসনের মতো এ আসনটিও আওয়ামী লীগ আর হাতছাড়া করেনি। ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনেও নূরুল ইসলাম সুজন এখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পঞ্চগড়-২ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটা ছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪১। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭১০ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৮ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ছিলেন তিনজন। তবে হালনাগাদ তালিকায় মৃত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পর এ আসনে ভোটার বেড়েছে ১৩ হাজর ২৬৭। এদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভোটার এক লাখের বেশি। তরুণ ভোটার ২৫ থেকে ৩০ হাজারের মতো।
পঞ্চগড়-২ আসনের রাজনীতি ও ভোটের মাঠে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি সক্রিয়। এই দুই দল মাঠ গোছানোর পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। দুই দলের বর্তমান দলীয় কর্মসূচি পালন পর্যালোচনায় আগামী সংসদ নির্বাচনে এখানে এই দুই দলের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
পঞ্চগড়-২ আসনের রাজনীতি ও ভোটের মাঠে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি সক্রিয়। এই দুই দল মাঠ গোছানোর পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। দুই দলের বর্তমান দলীয় কর্মসূচি পালন পর্যালোচনায় আগামী সংসদ নির্বাচনে এখানে এই দুই দলের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এই আসনে বিগত নির্বাচনে বিএনপির মনোয়ন পাওয়া ফরহাদ হোসেন আজাদ দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে এবং ভোটের মাঠে তাকে আরও বেশি সক্রিয় দেখা গেছে। তিনি প্রতিদিন তার নির্বাচনী এলাকায় উঠোন বৈঠক, সভা-সেমিনারসহ দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এবারও দলীয়ভাবে তিনিই মনোনয়ন পেতে পারেন বলে দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে নেতাকর্মীদের নিয়ে দল গোছানোর পাশাপাশি সংগঠনিকভাবে ব্যস্ত সময় পার করছি। তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নিয়মিত সভা, সমাবেশ, উঠোন বৈঠক করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফার প্রচারপত্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এর আগে আমি পঞ্চগড়-২ আসনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করলেও রাতের ভোটে আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমি বসে থাকিনি। এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, শুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে এ আসনটি বিএনপি পুনরুদ্ধার করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে নেতাকর্মীদের নিয়ে দল গোছানোর পাশাপাশি সংগঠনিকভাবে ব্যস্ত সময় পার করছি। তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নিয়মিত সভা, সমাবেশ, উঠোন বৈঠক করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফার প্রচারপত্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এর আগে আমি পঞ্চগড়-২ আসনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করলেও রাতের ভোটে আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির পাশাপাশি রাজনীতির মাঠে এখানে সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এরইমধ্যে পঞ্চগড়-২ আসনে জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক বোদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সফিউল্লাহ সুফির নাম ঘোষণা করা হয়। তবে কৌশলে তাদের বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম চালু রেখেছিল। বর্তমান অনুকূল পরিস্থিতিতে তারাও নড়েচড়ে বসেছেন। নিজেদের মতো করে দল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারাও প্রতিদিন জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় উঠোন বৈঠক ও সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য সফিউল্লাহ সুফি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আমরা অনেক অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে টিকে রয়েছি। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে আমরা দল গোছানোর কাজ শুরু করি। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ করছি। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় কাজ করছি। স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক কাজ করতে পারছি। এখন দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আমার প্রতিপক্ষ বা অন্য কোনো পক্ষ থেকে কোনোরকম সমস্যা নেই। সবাই তো ইতিবাচক কথা বলছেন। তবে আমি আমার মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নির্বাচিত হওয়া বা সম্মান দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
হিন্দুদের পাশে পেতে দুই দলের তৎপরতা
দুঃসময়েও জামায়াতকে কাছে পেয়েছেন হিন্দুরা
হিন্দু ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত বোদা-দেবীগঞ্জ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের সমর্থন পেতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ব্যাপক তৎপর। আওয়ামী লীগ শাসনামলেও তারা সাধ্যমতো হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থেকেছে। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিন করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে মর্মান্তিক নৌকাডুবিতে ৭২ জন পুণ্যার্থী নিহত হন। সেসময় নিহতদের পরিবারের পাশে সবার আগে দাঁড়িয়েছিল জামায়াত।
ফ্যাসিস্ট শাসনামলে যখন ঘরের বাইরে বের হলেই গ্রেফতারের শঙ্কা ছিল সেই সময় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান। তিনি নৌকাডুবিতে মা-বাবা হারানো শিশু দিপুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। পরেও সে কথা রাখেন।
স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে আমরা দল গোছানোর কাজ শুরু করি। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ করছি। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় কাজ করছি। স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক কাজ করতে পারছি। এখন দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আমার প্রতিপক্ষ বা অন্য কোনো পক্ষ থেকে কোনোরকম সমস্যা নেই। সবাই তো ইতিবাচক কথা বলছেন। তবে আমি আমার মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নির্বাচিত হওয়া বা সম্মান দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
সেসময় নিহতদের পরিবারকে ২১ লাখ টাকা নগদ অর্থসহায়তা দেয় জামায়াত। নিহত প্রত্যেকের পরিবার পায় ৩০ হাজার টাকা।
গত ৫ আগস্টের পর এক জনসভায় গিয়েও সে পরিবারগুলোর খোঁজ নিয়েছেন জামায়াত আমির।
এছাড়া জামায়াতের স্থানীয় নেতা সফিউল্লাহ সুফিকেও হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজাসহ বিভিন্ন আয়োজনে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। পূজা-পার্বণ ছাড়াও তাদের পারিবারিক বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নেন তিনি। এসব কারণে তাদের সমর্থন জামায়াতের পক্ষেই থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন সফিউল্লাহ সুফি।
জামায়াত নেতা সফিউল্লাহ সুফি বলেন, আমাদের বোদা-দেবীগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অন্য এলাকার তুলনায় নিরাপদে বসবাস করছেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীসময়ে তারা যাতে নিরাপদে থাকতে পারেন, তাদের প্রতি যেন কোনো প্রকার অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম করা না হয়, সেই চেষ্টা করা হয়েছে। আমি নিজেই দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে তাদের পাহারা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তাদের ডাকে বিভিন্ন আয়োজনে গিয়ে উপস্থিত থেকে নানাভাবে সহায়তার চেষ্টা করা হয়েছে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের শারদীয় দুর্গাপূজায় দলের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।
সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে তৎপর বিএনপি
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সারাদেশের মতো পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে হিন্দুরা ভারতে যাওয়া শুরু করেন। সেই সময়ে (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য কল্যাণ ফ্রন্টের ব্যানারে বোদা উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সভায় গুজবে কান না দিয়ে, দেশ না ছেড়ে সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদের আহ্বানে সভায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও মহাসচিব তরুণ দে উপস্থিত ছিলেন।
আওলিয়ার ঘাটে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের পরিবারপ্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ হাজার করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এছাড়া বিভিন্ন সময় দুর্গাপূজা, লক্ষ্মীপূজা, কালিপূজা, বারুণী স্নান উৎসবসহ বিভিন্ন পূজায় উপস্থিত থেকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করতে দেখা ফরহাদ হোসেন আজাদকে।
সর্বশেষ রথযাত্রার একাধিক আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য আগামীতে এ আসনের হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন বিএনপির পক্ষে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফরহাদ হোসেন আজাদ।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর শারদীয় দুর্গাপূজা স্বাভাবিকভাবে করা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। আমি সেই সময়ে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজিকে নিয়ে বোদা-দেবীগঞ্জের প্রায় ১২৫টি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনসহ তাদের নিরাপত্তা প্রদানে আশ্বস্ত করি। সেই সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের প্রায় পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন মন্দিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া অভ্যুত্থান পরবর্তী তাদের প্রতি অন্যায়ভাবে যেন হামলা, মামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর বা তাদের কোনো প্রকার হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করেছি।
অন্যান্য দলের তৎপরতা
এই আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে এখনো দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান বোদা উপজেলা এনসিপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শিশির আসাদ।
অন্য দলের মধ্যে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ জাসদের জেলা সভাপতি এমরান আল-আমীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কামরুল হাসান প্রধান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার ব্যারিস্টার তামিয়া প্রধান, জাকের পার্টির শাহ আলম, সিপিবির আশরাফুল ইসলামের নাম শোনা গেছে। এসব দলের পক্ষ থেকেও সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।এছাড়া খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকেও পঞ্চগড়-২ আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে।