
জুলাই আন্দোলনের ‘আমি কে তুমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১৪ জুলাই) রাতে মিছিল করে সরকারি তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলগেটসংলগ্ন বটতলায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তবে শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হন।
শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছাত্রদল কেন বাধা দিয়েছে—এই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসাইন মিছিল করা ‘শিক্ষার্থীদের অনেকে ছাত্রলীগ করে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইমাম হোসাইন বলেন, ‘গতকাল মব সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। ছাত্রদল এখানে বাধা দেওয়ার কেউ না। মিছিলে যারা রাজাকার, রাজাকার স্লোগান দিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে ছাত্রলীগ করে। মিছিল করুক তবে ছাত্রলীগ নিয়ে কেন করবে? এখানে যে নেতৃত্ব দিয়েছে সুজন সে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ করত। এখন সে কয়েকটা কোটাবিরোধী আন্দোলন করে নিজেকে বৈষম্যবিরোধী বলে সেভ করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরো বলেন, বটতলায় ছাত্রদলের যারা বাধা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের আহবায়কের বক্তব্য ভিত্তিহীন ও বানোয়াট দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কামরুল ইসলাম সুজন বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করেছে ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা অন্য কোন ছাত্র সংগঠন এটি করেনি।
তিনি আরো বলেন, যারা রাজাকার রাজাকার স্লোগান দিয়েছে ছাত্রদলের আহ্বায়ক তাদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট। মিছিলে ছাত্রলীগের কেউ ছিলো না।
সুজন বলেন, আমরা যখন হলে স্লোগান দেই তখন তারা জিয়ার সৈনিক এক হও স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা হল থেকে বের হয়ে রাজউকের গেটে আসলে ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী আমাদের সাথে সংঘর্ষে জড়ানোর পাঁয়তারা করে। আমরা তাদের এড়িয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। তখন তারা বটতলায় পিছন থেকে (২০২২-২০২৩) সেশনের এক শিক্ষার্থীকে কলার চেপে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো।
এর আগে সোমবার রাত ১১টার দিকে শহীদ মামুন হল থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি হলগেটসংলগ্ন বটতলায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় সাংবাদিকরা মিছিলের ভিডিও ধারণ করতে গেলে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী একজন সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠে।
মিছিলটি পরে টিবি গেট হয়ে কলেজের প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের—‘তুমি কে, আমি কে – রাজাকার রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে – স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ-দাদার?’ সহ আরও নানা প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায়।