
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার নিরপেক্ষ হয়নি বলে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। বিচারিক আদালতে দ্রুতগতিতে সাক্ষ্য নেওয়া ও রায় ঘোষণা করা, জুবাইদা রহমানকে নোটিস না করা এবং অভিযোগ গঠনে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলেও রায়ে বলা হয়। স্বয়ং হাইকোর্ট যখন বলছে তারেক রহমান দম্পতির বিচার নিম্ন আদালতে নিরপেক্ষ হয়নি তখন আদালতের এমন যুগান্তকারী মন্তব্যে নেটিজেনরা প্রশংসার জোয়ারে ভাসাচ্ছেন বাংলাদেশের বর্তমান বিচার ব্যবস্থা ও এই রায় দেওয়া বিচারককে।
সোমবার (১৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব কথা উঠে আসে। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের তিন বছরের সাজা হয় বিচারিক আদালতে। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাই কোর্ট বলেছে, বিচারিক আদালতে দুই মাস চার দিনে ৪২ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া এবং সাক্ষী শেষে আট দিনের মধ্যে রায় দেওয়ার এমন দ্রুতগতি ও সমাপ্তি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস তৈরি করে যে ‘বিচার নিরপেক্ষ’ হয়নি।
এদিকে গত ২৮ মে হাই কোর্ট ওই মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানকে খালাস দিয়ে রায় দেয়। সাজার বিরুদ্ধে জুবাইদা রহমানের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
হাইকোর্টের এমন যুগান্তকারী মন্তব্যে নেট দুনিয়ায় রীতিমতো প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাংলাদেশের নেটিজেনরা। নুসরাত জাহান তণু নামের এক নেট নাগরিক ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন, ‘বাহ বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রশংসা না করে আর পারছি না। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় বরাবরই দেখতাম তারেক রহমান-জোবায়দা রহমানকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট বিষয়েও আশাহত সব বিচার। আর এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশে হাইকোর্টের সত্যটা তুলে ধরা প্রমাণ করে বিচার ব্যবস্থাতেও আমরা কতখানি এগিয়ে গেছি আর কতখানি নিরপেক্ষ বর্তমান বিচার কার্য।’
জাহানারা মিতু নামের আরেকজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ বিচারক মহোদয়কে সত্যটা বলার জন্য। ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিগত ১৬ বছর যেভাবে বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করেছে নিজের প্রয়োজনে পুতুলের মত ব্যবহার করেছে তা থেকে এখন বেরিয়ে এসে সত্যটা তুলে ধরছেন বিচারকরা।’
সাগর খান নামের আরেকজন এই সংক্রান্ত নিউজের একটি স্ক্রিণসট শেয়ার করে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনার দোসর মুক্ত হয়েছে তাহলে আমাদের বিচার ব্যবস্থা। নিম্ন আদলত যে অন্যায় করেছিলো বিচার ঠিক হয়নি সেটা হাইকোর্ট বলা তাই প্রমাণ করে। সঠিক বিচার পাবে তারেক রহমান দম্পতি সেই প্রত্যাশাই করি।’
তারেক রহমান দম্পতির বিচার নিম্ন আদালতে নিরপেক্ষ হয়নি বলে হাইকোর্ট মন্তব্য করায় এভাবেই বাংলাদেশের বিচার ব্যবাস্থার প্রশংসা করছেন সাধারণ নেটিজেনরা। তাদের মতে ফ্যাসিবাদ মুক্ত নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার যে স্বপ্ন বুনেছে সাধারণ মানুষ তার প্রতিফলন যেনো হাইকোর্টের এই রায় আর মন্তব্য।