Image description

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে সাম্প্রতিক যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে বলে দ্যা স্টেটসম্যান এক সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এক সময় হাসিনা গণতন্ত্রের রক্ষক ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আর এখন তিনি দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস দমন-পীড়নের অনুমোদনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত। যাচাই করা অডিও রেকর্ডিং এবং ফরেনসিক বিশ্লেষণ এই অভিযোগকে সমর্থন করে। সেখানে শেখ হাসিনা নিজে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তা জাতীয় আন্দোলনে রূপ নেয়। বিগত দেড় দশকে হাসিনা ক্রমে নিজের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করেছেন এবং ইচ্ছামতো গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিরোধী মত দমন করেছেন। দ্য স্টেটসম্যানের মতামতে আরো বলা হয়, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংগুলো আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু হাসিনার দল এখনও দৃঢ় অবস্থানে। তারা দাবি করছে, ওইসব পদক্ষেপ ছিল ‘উপযুক্ত’ এবং ‘সৎ উদ্দেশে’ নেওয়া।

কিন্তু প্রামাণ্য দলিল বলছে ভিন্ন কথা: আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ ইউনিটগুলো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে; ফরেনসিক বিশ্লেষণে শেখ হাসিনার গুলি করার নির্দেশের কণ্ঠ শনাক্ত করা হয়েছে। এবং সরকার-নিয়ন্ত্রিত নজরদারি অবকাঠামো ব্যবহার করা হয়েছে বিরোধীদের পর্যবেক্ষণ ও দমনে।

এই তথ্যে শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে আশপাশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো, কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যখন ক্ষমতালিপ্সু সরকারগুলো এমন সহিংসতা চালায়। ঢাকায় এখন ইতিহাস লেখা হচ্ছে—এটা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা অঞ্চলের চোখে চোখ রেখে দেখার সময়, উল্লেখ করেছে দ্য স্টেটসম্যান।

শীর্ষনিউজ