Image description

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, "আমার মুক্তির মাধ্যমে শুধু একজন ব্যক্তি নয়, জামায়াতে ইসলাম নিজেই ষড়যন্ত্রের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে।"

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমি কারাগারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানিতে সেই ফাঁসির মঞ্চ থেকে আমি আজ লক্ষ জনতার মঞ্চে এসেছি। যে গলায় রশি পড়ার কথা ছিল, সেই গলায় আজ ফুলের মালা পড়ানো হচ্ছে।”

তিনি আবেগভরে বলেন, “আমার মুক্তির প্রথম সোপান ছিল শহীদ আবু সাঈদের রক্ত। তার বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শুরু হয়েছিল গণঅভ্যুত্থান, যার পরিণতি হয়েছিল ৫ আগস্ট। যদি সেদিন তা না হতো, তাহলে আপনারা হয়তো আমার জানাজায় অংশ নিচ্ছেন।”

তিনি দাবি করেন, “আবু সাঈদ তার রক্ত দিয়ে আমাকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। আমি তার হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।”

কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে আজহারুল ইসলাম বলেন, “এই অভিযোগে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে আমাদের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং প্রকৃত বিচার হতে হবে।”

তিনি বলেন, “জেলখানায় কোরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ বহু নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় হত্যা করা হয়েছে।”

ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, “যারা বলেছিল পালায় না, তারাই আজ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অথচ আমাদের পাকিস্তানি বলা হলেও আমরা পালাইনি। বরং শহীদদের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছি।”

তিনি বলেন, “আধিপত্যবাদ বিরোধী শক্তির হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ। ইসলামী ঐক্যের মাধ্যমে বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনই আমাদের লক্ষ্য।”

তিনি বলেন, “যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, তাদের আমরা ভুলে গেলে চলবে না। তাদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে বিরল। আজ গণতন্ত্র মুক্ত বাতাস পেয়েছে, তবে এখনও অনেক পথ বাকি।”

তিনি আরও বলেন, “ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবাইকে দেশপ্রেম নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”

বক্তব্য প্রদানের আগে এটিএম আজহারুল ইসলাম রংপুর শহরের গর্ব শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং তার বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজখবর নেন।