Image description
গোলাম পরওয়ার

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিগত সরকার ফ্যাসিবাদী আচরণের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক বাতিল করেছিল। গতকাল বুধবার কালবেলাকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বিচার ও আদালতকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারকে কেড়ে নেওয়া ফ্যাসিবাদীদের হাজারো অত্যাচার জুলুমের মধ্যে এটি একটি বড় উদাহরণ জাতির কাছে। তবে আদালতে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি যে, এটা আমাদের আইনগত ও সাংবিধানিক অধিকার। আজকে এ সত্যটা প্রমাণিত হলো যে, সেই সময়কার সরকার অন্যদের এবং আদালতকে কাজে লাগিয়ে যা করেছিল, সেটি তারা অন্যায় করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি এবং এ জন্য সারা দেশের মানুষ দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে যারা অন্যায়কে অন্যায় বলে নিশ্চয়ই এ খবরে তারা আনন্দিত হবে এবং কৃতজ্ঞতা জানাবে। যেসব আইনজীবী আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০০৯ সালের একটা রিট পিটিশনের সূত্র ধরে ২০১৮ সালে আমাদের নিবন্ধনটা নির্বাচনের (একাদশ সংসদ নির্বাচন) আগে আগে বাতিল করা হয়েছিল। এই কাজটি করা হয়েছিল ১৪ দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের একজনকে দিয়ে। ইচ্ছাকৃতভাবে সেটি করা হয়েছে। সেটিই আইনি লড়াই করে জুনের ১ তারিখে আদালতের মধ্য দিয়ে আমরা রায় পেয়েছি যে, নিবন্ধন বাতিল করার যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল ওই আদেশটা বাতিল করে নিবন্ধনকে পুনর্বহাল করেছে। আর প্রতীক সম্পর্কে অন্যায় করেছে যে, বিচারকদের অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে তখনকার সরকার প্রভাব খাটিয়ে একটি ফুলকোর্ট সভা করে বলল যে, এই প্রতীকটা কোনো রাজনৈতিক দল ব্যবহার করতে পারবে না। অথচ কতকাল থেকে আমরা সেটি ব্যবহার করছি। কত জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা (প্রতীক বাতিল) উনারা ফুলকোর্ট সভা করে করালেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান ছিল যে, এটা একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। যার আইনগত কোনো মূল্য নেই। এটা কোনো আদালতের আদেশ নয়। এগুলোই আমরা আদালতে বলেছি। আদালত আমাদের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার সময়ও নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে নির্বাচন কমিশন সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে নিবন্ধকালীন যে প্রতীক ছিল দাঁড়িপাল্লাসহ আমাদের নিবন্ধন ফেরত দিয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সে জন্য আমরা মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এটা নিয়ে আমাদের কোনো অহংকার নেই। কোনো উল্লাস, কোনো গর্ব আমরা করি না। আমরা মনে করি এটা আমাদের প্রতি আল্লাহর দয়া। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাব যে, আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তাদের জনমত, ভালোবাসা ও সহানুভূতি জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আমাদের সেই আহ্বান দেশবাসী তাদের সাড়া দেবে।’

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় নেতাকর্মীরা আনন্দিত এবং অত্যন্ত খুশি। কারণ তারা বছরের পর বছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দেশে-প্রবাসে সাধারণ মানুষ এবং আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা দোয়া ও আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেছে। তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা আল্লাহ পূরণ করেছেন, তারাও সন্তুষ্ট।’