
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ৫ আগস্ট তথা ‘৩৬ জুলাই’-এর আগেই যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন তার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানা যায়নি। বিএনপির একাধিক সূত্র আমাদের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাওয়া খুব শিগগিরই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। বিশেষ করে নির্বাচনের মনোনয়ন, দল গোছানোসহ অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সেগুলো বাস্তবায়নে তারেক রহমানের বিকল্প নেই। আমরা যতদূর জানি, তারেক রহমান ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরছেন।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘যতদূর জেনেছি চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে তারেক রহমানের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এখন তা আরও এগিয়ে আনা হতে পারে। নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে এখন দেশে ফেরার তাগাদা দিচ্ছেন।’
এর আগে তারেক রহমানের দ্রুত দেশে ফেরার কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তারেক রহমান অবশ্যই দেশে ফিরবেন। তিনি খুব শিগগিরই ফিরছেন। ’ তবে বিএনপি মহাসচিব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাননি তখন।
মির্জা ফখরুলের আগে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনি (তারেক রহমান) খুব শিগগিরই ফিরবেন, ইনশাল্লাহ।তবে দিন-তারিখ বলতে পারব না।’ এরপর সাক্ষাৎকারগ্রহীতা প্রশ্ন করেন, ‘তিন মাসের মধ্যে?’ জবাবে, সালাহউদ্দিন বলেন, ‘তারও আগে’।
এদিকে, গতকাল বুধবার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আশরাফ কায়সারের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি বহুলভাবে চর্চিত হয়। তারেক রহমানের নাম উল্লেখ না করে পোস্টে তিনি লেখেন, ‘তিনি লন্ডন থেকে ফিরছেন ৩৬ শেজুলাই এর আগেই।’ গতকাল তিনি অপর পোস্টে লেখেন, ‘অতি শীঘ্রই তারেক রহমানের দেশে ফেরা উচিত।’
গতকাল তারেক রহমানের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করে আরও একটি পোস্ট দেন আশরাফ কায়সার। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার চোখে, গত ১০ মাসে নেতৃত্বের গুণাবলীতে তিনি দশ ধাপ এগিয়েছেন। চেষ্টা করছেন রাজনীতির নতুন ব্যাকরণের সঙ্গে বিএনপিকে মানানসই করতে সেইসঙ্গে তার সম্ভাব্য রাষ্ট্র পরিচালনা। প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে তার খোলাখুলি আলোচনা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে নতুন পথনির্দেশনা দিবে সে প্রত্যাশায়।’
বিগত ওয়ান ইলেভেন ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া ৮০টির বেশি মামলার মধ্যে অনেক মামলা বাতিল-খারিজ হয়েছে। বাকিগুলো থেকে খালাস ও জামিন পেয়েছেন তিনি। এরপর তার দেশে ফেরায় বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।
আজ বৃহস্পতিবার একই কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের সালনা হাইওয়ে থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরা সহজ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) তো দেশে ফিরতে কোনো অসুবিধা নেই। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, যেকোনো সময় ইচ্ছা করলেই দেশে ফিরতে পারেন।’