
সামরিক এবং পরমাণু স্থাপনায় ইসরাইলের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা স্থগিত করেছে ইরান। শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ইসরাইলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এবং ওমান নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন টাইমস অব ওমান।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোহাম্মদ এসলামি বলেছেন, ইসরায়েলের হামলায় কূটনৈতিক সমাধানের পথ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, যা ইরানি কূটনীতিকদের সঙ্গে আমেরিকানদের মধ্যে চলমান ছিল।
এসলামি আরও বলেন, বর্তমানে ইরানের পক্ষ থেকে আলোচনায় ফেরার কোনো সিদ্ধান্ত নেই, কারণ ইরান মনে করে এই হামলা আমেরিকার সহায়তায় সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে ইরানে শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জন নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম।
যদিও হতাহতের এই সংখ্যা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি ইরানের সরকার।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব দিকে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। পরে ইরানের আরও কয়েকটি প্রদেশে হামলা চালায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এই হামলার মাধ্যমে বিশেষ করে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব এবং দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।
ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী পরমাণু বিজ্ঞানীর প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
ইসরাইলের হামলার জবাব দিতে ইরান শতাধিক অ্যাটাক ড্রোন ব্যবহার করে পালটা হামলার চেষ্টা চালালেও তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। বেশিরভাগ ড্রোনই ইসরাইল এবং জর্ডানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকিয়ে দিয়েছে।
টাইমস অব ইসরাইলের বরাত দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কার্টজ জানিয়েছেন, ইরানে বিমান হামলা চালানোর পর পুরো ইসরায়েলজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ইসরাইলের সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির সরকার।
ইসরাইলের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি বলেছেন, মার্কিন সহায়তায় চালানো এই হামলার জন্য ইসরাইলকে নির্মম পরিণতি ভোগ করতে হবে।