
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন আমাদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এই চিঠির কারণেই স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেল ৪টায় গলাচিপা উপজেলা রেস্ট হাউজের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির মিত্র হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানো সত্ত্বেও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) গলাচিপা ও দশমিনার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কালারাজা, চরকাজল, চরবিশ্বাস ও পাতাবুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীরা মারধরের শিকার হয়েছেন। ইতোমধ্যে ১২০ জন আহত হয়েছেন, ১৭টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে, দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং আরও অনেকগুলো মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ৫ আগস্টের পর যখন প্রথম পটুয়াখালীতে প্রবেশ করি তখন আমখালা ইউনিয়নে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে এই পরিস্থিতির সূচনা করেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত হাসান মানুন এই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিটা তৈরি করে রেখেছেন। হাসান মামুনের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দু-এক দিনের নয়। বিএনপির অভ্যন্তরীণ একটি চিঠির মাধ্যমেই এই সাংঘর্ষিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণেই বলেছি, বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে।'
এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘আমরা নেতাকর্মীদেরকে বলেছি, প্রত্যেকটি ঘটনার তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে মামলা করুন। মামলা করে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। অন্যথায় আপনারা অনিরাপদ। গতকাল ঘটনার পরেই আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ভূমিকা দেখেই, আমাদের পরবর্তী করণীয় এবং কর্মকৌশল ঠিক করব।’
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভিপি নূর বলেন, ‘আপনারা একটি বড় রাজনৈতিক দল, আপনাদের কাছ থেকে জনগণ অনেক কিছু আশা করে। এই ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিএনপির মিত্র হিসেবে ভিপি নূরদেরই এই অবস্থা! তাদের ঠিকভাবে চলাফেরা করতে দিচ্ছে না, অফিস ভাঙচুর করে, অবরুদ্ধ করে রাখে, তাহলে অন্যদের কি হবে? এই প্রশ্ন আজ সাধারণ মানুষের।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম সিকদার, উপজেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন মুন্সীসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ অক্টোবর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো. নুরুল হককে (ভিপি নুর) তার সংসদীয় এলাকা পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।