
২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। দলটি মনে করে, শুধু সময়সূচি নির্ধারণ যথেষ্ট নয়— একটি কার্যকর, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে এখনই প্রয়োজন সর্বাত্মক প্রস্তুতি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ন্যায্য পরিবেশের বাস্তব নিশ্চয়তা।
শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রত্যাশিত বার্তা উপস্থাপন করেছেন।
‘আমাদের মতে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলে ভালো হতো। তবুও আমরা সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। তবে শুধু তারিখ ঘোষণা করলেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হয় না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো— নির্বাচনি পরিবেশকে পেশিশক্তিমুক্ত, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং সবার জন্য সমান সুযোগসম্পন্ন করে তোলা।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের যে অঙ্গীকার উচ্চারিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের একমাত্র পথ হলো—
-
জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
-
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।
-
নির্বাচন কমিশনের সাহসী ও স্বাধীন ভূমিকা।
-
গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের অবাধ পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে তিনটি মৌলিক শর্ত পূরণ অপরিহার্য—
১. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো।
২. ভোটাধিকার প্রয়োগে নিরাপদ ও সহনীয় পরিবেশ।
৩. রাজনৈতিক দলসমূহের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, একটি অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচনই পারে দেশে গণতান্ত্রিক ধারার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, আপনার সদিচ্ছাকে বাস্তব রূপ দিতে হলে এখনই প্রয়োজন:
-
ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রমে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের অগ্রগতি।
-
চলমান সংস্কার প্রক্রিয়াকে বেগবান ও কার্যকর করা।
-
‘জুলাই-সনদ’ যথাসময়ে প্রকাশ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা- আগামীর বাংলাদেশের গন্তব্য নির্ধারণ ও ফ্যাসিবাদ মোকাবিলার জন্য যা অত্যন্ত জরুরী।
-
সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে নিয়মিত ও অর্থবহ সংলাপের ধারা চালু রাখা।
-
নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করা।
বিবৃতির শেষাংশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করি—দেশবাসী যেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জনমতের প্রতিফলন প্রত্যক্ষ করতে পারে।