
কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা হয়। ইসলামি শরিয়তে কোরবানির অর্থ হলো- আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো প্রিয় বস্তু তার দরবারে উৎসর্গ করা। কোরবানি কেবল পশু জবাই নয়; বরং এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও আনুগত্যের এক মহান নিদর্শন।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘কোরবানির গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং কোরবানির মধ্য দিয়ে তোমাদের তাকওয়া-পরহেজগারি বা আল্লাহভীতিই তার কাছে পৌঁছে। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন- যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করো। এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’ (সুরা হজ, আয়াত-৩৯)
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কোরবানি করা পশুর গোশত কোরবানিদাতা নিজে খেতে পারবে এবং অন্যকে দাওয়াত করেও খাওয়ানো যাবে। বিয়ে কিংবা যে কোনো বৈধ অনুষ্ঠানে এ গোশত দ্বারা খাবার পরিবেশন করাতেও কোনো বাধা নেই। তবে শুধু বিয়ে বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানের নিয়তে কোরবানি করলে তা বৈধ হবে না।
কারণ, এতে গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি হয়ে যাচ্ছে এবং আল্লাহর বিধান পূর্ণ করার জন্য এ কোরবানি করা হচ্ছে না, বরং আত্মীয়দের খাওয়ার জন্য পশু জবাই করা হচ্ছে। তাই শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানের নিয়তে কোরবানি করলে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি আল্লাহর হুকুম পালন করার উদ্দেশ্যে কোরবানি করে থাকে, আর এরপর কোরবানির গোশত দিয়ে বিয়ের মেহমানদারি করে, তাহলে কোরবানিও শুদ্ধ হবে আবার মেহমানদের খাওয়ানোও বৈধ হবে।
এখানে মাসয়ালা মূলত দুটি। একটি হলো কোরবানির অংশকে বিয়ের মেহমানদারির জন্য কোরবানি করা। আর দ্বিতীয় মাসয়ালা হলো, কোরবানির অংশ নয়, বরং কোরবানির পশুতে আলাদা অংশে বিয়ের অনুষ্ঠান বা ওলিমার অংশ রাখা। প্রথম অবস্থায় কোরবানি আদায় হবে না, দ্বিতীয়টিতে কোরবানি আদায় হয়ে যাবে।