Image description

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তৎপরতায় রাজনৈতিক অস্থিরতা আপাতত কমেছে। তবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে অস্পষ্টতা দূর হয়নি। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছে। তারা কেউ ছাড় দিতে নারাজ। গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছে বিএনপি। ওদিকে জামায়াতে ইসলামী সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে আরও জোরালো অবস্থান নিয়েছে।

বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের সমন্বিত রোডম্যাপ চাওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবি আরও দীর্ঘ হয়েছে। ফলে নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আশঙ্কা এখনো কাটেনি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের চলমান অস্থিরতা, সংকট, অস্পষ্টতা দূর করতে হলে জাতীয় নির্বাচনই একমাত্র পথ এবং সরকারকেই সে বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে। কেননা, গণঅভ্যুত্থানের নয় মাসের মাথায় এসে সরকার, রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনীসহ অংশীজনের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস বেড়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাপানে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই হবে। তবে বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারাও সরকারের সমালোচনা করে নির্বাচন নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এরই মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতাও বাড়িয়েছে দলটি। ফলে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ৪৩ সিনেটর ও এমপি দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন।

মিয়ানমারের রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’, চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া, জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে শপথ পড়ানো নিয়ে অচলাবস্থা, নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ বেশকিছু ইস্যু ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়। এমনকি প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখী লংমার্চ ও লাগাতার আন্দোলনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। আন্দোলনের মধ্যেই গত ২২ মে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের উদ্যোগ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত শনি ও রোববার দুদিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি ছাড়াও ২২টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকগুলোর মাধ্যমে সংকট সাময়িকভাবে নিরসন হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের সঙ্গে বিএনপি ও সেনাবাহিনীর দূরত্ব এখনো কাটেনি।

সরকার বলছে নির্বাচন ডিসেম্বর-জুন: নির্বাচন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান হচ্ছে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাপান সফররত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘সংস্কার আমাদের একটি এজেন্ডা। এরপর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচার এবং তৃতীয় এজেন্ডা হচ্ছে নির্বাচন। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই বলছেন কেন জুনের মধ্যে হবে, ডিসেম্বরের মধ্যে কেন হবে না? এটা নির্ভর করছে আমরা কতটুকু সংস্কার করতে পারছি তার ওপর। আমরা এভাবে দেশকে ছেড়ে দিতে পারি না। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রে একটি শান্তিপূর্ণ ও কার্যকর রূপান্তর ঘটাবে।’

গত রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতারা চলমান সংস্কার ও বিচারিক কার্যক্রম এবং নির্বাচন নিয়ে সরকারের উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তারা সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক নেতাদের জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। প্রধান উপদেষ্টার এই কথায় রাজনৈতিক নেতারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান প্রেস সচিব।

নির্বাচন ইস্যুতে হুঁশিয়ারি বিএনপির : ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। শুরু থেকেই সরকারকে সমর্থন দিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। দলটির কাছে সরকারের লক্ষণ ভালো মনে না হওয়ায় ওই দাবি পরে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে গিয়ে স্থির হয়েছে। এই দাবিতে সরাসরি মাঠে না নামলেও নানাভাবে প্রচার চালাচ্ছে দলটি। একই সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতাও বাড়িয়েছে। অতিসম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি করে দলটি। এ ছাড়া দেশে প্রায় দেড় যুগ ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত দেশের তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের বড় বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ-সেমিনার করেছে বিএনপি। দলের তিনটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মে মাসে মোট ৪টি বড় সমাবেশ করা হয়েছে। সর্বশেষ বুধবার ঢাকায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের উদ্যোগে মহাসমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

বুধবারের সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরই ভেতরে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ। এরই মধ্যে জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, সংস্কার নিয়ে সময়ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কারও কারও মনে হয় কিছু ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক, দায়বদ্ধ একটি সরকার দ্রুত দেখতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আবারও আমরা বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

ওই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অভ্যন্তরে মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচন ধরেছে। এই সরকার যদি এভাবে দেশ আরও পরিচালনা করে, আওয়ামী লীগ যা করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে। এ জন্য অবশ্যই দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনে যে কেউ আসুক, একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ থাকবে।’ স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল স্বৈরাচারী সরকার। সেখান থেকে দেশকে বাঁচিয়েছেন এই তরুণরা। জুলাই-আগস্টে আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে; কিন্তু আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরা সংগ্রামের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছি। বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে রূপ দিতে অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই সংগ্রাম চলবে। সরকারের কাছে উদাত্ত আহ্বান, দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সসম্মানে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।’

নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের বক্তব্য অস্পষ্ট

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আগে সংস্কার, পরে নির্বাচনের কথা জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মাঝেমধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিও জানায় দলটি। এরপর আগামী রোজার আগে নির্বাচনের কথা বলেছে জামায়াত। সম্প্রতি নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইলেও সুস্পষ্টভাবে কিছু বলছে না তারা। অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের বক্তব্য অস্পষ্ট। সর্বশেষ গত শনিবার দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮-তে নিশি রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালে ‘ডামি আর আমি’র প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে চরম তামাশা করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে, যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছিলাম। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের প্রতি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করছি। এরপর আমাদের দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের সুষ্ঠু বিচার। এ বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ। তবে জাতির কাছে বিশ্বাসযোগ্য বিচারকার্য অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান। এতে আমাদের আস্থা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই।’

আগের অবস্থানে অনড় এনসিপি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল এনসিপি ছয় দাবিতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পরও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে দলটি। এনসিপি জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাতের সংস্কার ও নির্বাচনের সমন্বিত রোডম্যাপ চাইলেও সংসদের আগে স্থানীয় সরকারের ভোট, ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগ আমলের সব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করার দাবি জুড়ে দিয়েছে। এসব দাবি নিয়ে এরই মধ্যে রাজনীতির মাঠে নেমে পড়েছে এনসিপি। দলের কেন্দ্রীয় ও শীর্ষ নেতারা এরই মধ্যে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় পথসভা-সমাবেশ করেছেন। ১৫ সপ্তাহে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন করে ছয় দাবি নিয়ে তৃণমূলে যাবেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘সারা দেশে সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী করতে নির্বাচনের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জোর দিচ্ছে এনসিপি।’

‘বিএনপি সঠিক পথেই হাঁটছে’

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান গতকাল কালবেলাকে বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সব পক্ষই যার যার অবস্থানে অনড়, এটা বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। তবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নির্ভর করবে সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়ার ওপর। বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছে। এই দলটি এখনো ভোটের জন্য আন্দোলন করছে এবং তাদের সেটি করতে হবে। গণতন্ত্রে উত্তরণের ক্ষেত্রে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, সরকার গত নয় মাসে সংস্কার কার্যক্রমসহ কিছু ভালো উদ্যোগও নিয়েছে, যা ইতিবাচক। তবে গত নয় মাসে সরকারের তরফে ভালো কাজগুলোর অনেক কিছুই এখনো দৃশ্যমান হয়নি। দেশের যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নেই। আমি মনে করি সার্বিক বিষয়ে বিএনপি এখনো সঠিক পথেই হাঁটছে। বিএনপিকে নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য নির্বাচনের দাবি করে যেতেই হবে।