
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য যারা হতাশ; তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটপাটে হতাশ নয়। এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীরা একে-অপরকে হত্যা করছে, সেটাও দেখেও তারা হতাশ হয় না।
মঙ্গলবার (২৭ মে) মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সক্রিয় সহযোগী সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু একটি নির্বাচন দিয়েই গণতন্ত্র উদ্ধার হয়ে যায় না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। গণতন্ত্রের জন্য গণতান্ত্রিক ধারা অনুযায়ী রাজনীতি করতে হবে। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস লালন-পালন পরিহার করতে হবে। যারা নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে চায় বলে দাবি করে, তারা আসলে সত্যিকারের গণতন্ত্র বোঝে না। গণতন্ত্রের নামে তারা স্বৈরতন্ত্রে লিপ্ত। যারা নিজেরা নিজেদের নেতাকর্মীদের হত্যা করে, তারা কখনোই জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। তারা ক্ষমতায় বসে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে আবারও ফ্যাসিবাদ কায়েম করবে। ইতোমধ্যে তাদের কারও কারও কর্মকাণ্ডে জনগণ আতঙ্কিত ও শঙ্কিত।
যারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে, তারা জনভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে না উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী যমুনা ঘেরাও করে কিংবা রাস্তা বন্ধ করে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্ত করেনি; আইনের মাধ্যমেই মুক্ত করেছে। অন্যদের তুলনায় জামায়াতে ইসলামী আরও বেশি জনশক্তি নিয়ে যমুনা ঘেরাও করতে পারত, রাস্তা বন্ধ করে দেশবাসীর ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারত। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী তা করেনি, কারণ জামায়াতে ইসলামী জনগণের জন্য রাজনীতি করে।
তিনি আরও বলেন, মজলুম জননেতা মাওলানা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল আদেশের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, জামায়াতে ইসলামকে নেতৃত্বশূন্য করতে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে সাজানো মামলায় ফরমায়েশি রায়ে বিচারিক হত্যা করা হয়েছে। যেখানে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আজ স্বীকার করেছে, ঐ বিচারের মাধ্যমে ন্যায়ভ্রষ্টতা ঘটেছে। এমনকি দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এস.কে. সিনহাও তার লেখা বইতে স্বীকার করেছেন, জামায়াতের কোনো নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন না, কেউ রাজাকার ছিলেন না। জামায়াত নেতাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সেই বিচার করা হয়েছে।
আগামীতে জনগণ জামায়াতে ইসলামকে দেশ পরিচালনার সুযোগ দিলে সবার আগে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, কেবলমাত্র ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলেই বৈষম্যমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজিমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে। তাই একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো. রিপন শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরামের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।