
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা। এমন ক্ষমতা দিয়ে ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যপ্রণালী বিধিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে।
সংশোধিত আইসিটি আইনে তদন্ত সংস্থাকে এ ক্ষমতা দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, সদস্য এম মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও মো. শফিউল আলম মাহমুদের আদেশে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ এস এম রুহুল ইমরান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
এতে ট্রাইব্যুনাল কোনো আসামি বা আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউটরও পরোয়ানাভুক্ত আসামি বা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
এর আগে অভিযোগ ছিল, এতদিন এই ক্ষমতা না থাকায় পরোয়ানার তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় অনেক আসামিই পালিয়ে গেছে। তদন্ত সংস্থা এই ক্ষমতা পাওয়ায় এখন থেকে আর এ সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরোয়ানা জারির পরপরই জেনে যাচ্ছেন আসামি পুলিশ কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত কর্মস্থল ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ১৫ থেকে ২০ পুলিশ কর্মকর্তা। আইসিটির ২৩ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ৯৪ জনকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সঙ্গে পর্যায়ক্রমে যুক্ত থাকে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা, চিফ প্রসিকিউটরের অফিস, ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অফিস, আদালতের এজলাস, আইজিপি অফিস ও আসামির সংশ্লিষ্ট থানা। প্রসিকিউশন জানায়, সরকারি এসব অফিসের কেউ না কেউ তথ্য পাচার করে আসামিদের পালাতে সাহায্য করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের কার্যপ্রণালী বিধিমালার ২৪টি বিধিতে সংশোধন আনা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি বিধি একেবারেই বিলুপ্ত এবং বাকি ১৯টি বিধি আংশিক বা পুরোপুরি বিলুপ্ত করে নতুন কার্যপ্রণালী বিধি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।